বীর প্রতীক মো. শরীফ
মো. শরীফ, বীর প্রতীক (১৯৪৮-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৮ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার ছয়ানী টগবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সুলতান আলী এবং মাতার নাম ছফুরা বেগম। ৩ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।
মো. শরীফ ১৯৬৯ সালে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস্-এ যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁর পোস্টিং হয় কুমিল্লা জেলার কোটবাড়ির ১ নম্বর উইং-এ। ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকাসহ সারাদেশে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে তিনি কৌশলে পালিয়ে বিদ্রোহী বাঙালি ইপিআর সৈনিকদের সঙ্গে যোগ দেন। এরপর বিভিন্ন প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে মেজর খালেদ মোশাররফ, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে বিভিন্ন রণাঙ্গনে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। পরবর্তীতে সেক্টরভিত্তিক যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ২ নম্বর সেক্টরে যোগ দিয়ে বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। মেজর খালেদ মোশাররফ ও ক্যাপ্টেন রেজাউল আহম্মদের নেতৃত্বে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি কোম্পানি, ইপিআর-এর তিনটি কোম্পানি, মুজাহিদ, আনসার ও ছাত্র-যুবকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার কটক এলাকায় প্রতিরোধব্যূহ গড়ে তোলেন। এ এলাকায় নিয়োজিত পাকবাহিনীর ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট ও ৩৯ বেলুচ রেজিমেন্টের বিরুদ্ধে ৯ই মে মুক্তিযোদ্ধোদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মো. শরীফ বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে তিনি পাকবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক সিপাহি মো. শরীফকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড