বীর বিক্রম মো. ইব্রাহীম
মো. ইব্রাহীম, বীর বিক্রম (১৯৩৫-২০০৯) সুবেদার মেজর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতা হালিমা খাতুন এবং পিতা আইয়ুব আলী। তিনি নিজ গ্রামের বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
মো. ইব্রাহীম ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১ম বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধীনে যশোর ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন।
চৌগাছা থেকে ফিল্ড এক্সারসাইজ সংক্ষিপ্ত করে ক্যান্টনমেন্টে ফিরিয়ে আনার পর রেজিমেন্টের বাঙালি সৈনিকদের ২৯শে মার্চ নিরস্ত্র করা হয়। পাকিস্তানিদের মনোভাব বুঝতে পেরে ৩০শে মার্চ ভোরে তিনি কোত ভেঙ্গে অস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহ করে ক্যান্টনমেন্টে বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে যুদ্ধ শুরু করেন। ৩১শে মার্চ ক্যাপ্টেন হাফিজের সঙ্গে চৌগাছায় তাঁর সাক্ষাৎ হয়।
এরপর তাঁরা সংগঠিত হয়ে ৮ নম্বর সেক্টরে বিভিন্ন রেইড, গেরিলা ও সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্ত হন ‘জেড’ ফোর্সের সঙ্গে। ২২শে নভেম্বর ‘জেড’ ফোর্সের চার্লি ও ব্রাভো কোম্পানি সিলেটের আটগ্রাম ও চারগ্রামে স্থাপিত পাকবাহিনীর শক্ত প্রতিরক্ষা অবস্থানে আক্রমণ করলে পাকসেনারা টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে হতাহত সহযোদ্ধা ও প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। এতে মো. ইব্রাহীম সাহসিকতা ও কৌশলের সঙ্গে চার্লি কোম্পানির একটি প্লাটুনের নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর এ অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মো. ইব্রাহীম ৬ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম সুফিয়া বেগম। ২০০৯ সালের ২৫শে মার্চ এ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরলোক গমন করেন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড