You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. ইসহাক - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. ইসহাক

মো. ইসহাক, বীর প্রতীক (১৯৫১-১৯৭১) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৫১ সালে ফেনী জেলার ফুলগাজী থানার সীমান্তবর্তী গাবতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ফুলগাজী উপজেলা শহর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে এ গ্রামের অবস্থান। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ আহম্মদ এবং মাতার নাম নুরুন নাহার। তিনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন।
মো. ইসহাকের কর্মজীবনের শুরু পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সিপাহি হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে বাঙালি সৈনিকদের নানা বৈষম্যের শিকার হওয়ার বিষয়টি গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনের পর ফেব্রুয়ারি মাসে মো. ইসহাক ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে আসেন। মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন- শুরু হলে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ১৮ই এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়ে তিনি একাধিক প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন। সেক্টরভিত্তিক যুদ্ধ আরম্ভ হলে মো. ইসহাক ২ নম্বর সেক্টরভুক্ত সৈনিক হিসেবে যুদ্ধ করেন। তৎকালীন নোয়াখালী জেলার একটি বড় অংশ এ সেক্টরের আওতাভুক্ত ছিল। তাঁর সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন জাফর ইমাম, বীর বিক্রম।
২ নম্বর সেক্টরের অধীনে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে পরিচালিত বিভিন্ন যুদ্ধে মো. ইসহাক বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া থানার পাঠাননগরে দুপক্ষের মধ্যে একাধিক যুদ্ধ হয়। পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ হয় ২৯শে নভেম্বর। মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পাকসেনাদের আক্রমণ করেন। তাঁদের পরিকল্পিত ও তীব্র আক্রমণে পরাজিত হয়ে পাকসেনারা পালিয়ে যায়। তবে এ যুদ্ধে মো. ইসহাক শহীদ হন। তাঁকে তাঁর গ্রামের পার্শ্ববর্তী মান্দারপুরে কবর দেয়া হয়।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্ব ও সাহসিকতা প্রদর্শন এবং আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার মো. ইসহাককে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪০৬, খেতাবের সনদ নম্বর ১৫৬)। [জালাল আহমেদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড