বীর প্রতীক মো. এনায়েত হোসেন
মো. এনায়েত হোসেন, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৮) ১১নং সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৮ সালে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানি মিয়াপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম তোসাদ্দেক হোসেন এবং মাতার নাম জুলেখা খাতুন।
মো. এনায়েত হোসেন ১৯৭১ সালে পঞ্চগড় চিনিকলে চাকরিরত ছিলেন। মার্চ মাসে ছুটি নিয়ে তিনি বাড়িতে আসেন। ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়লে মো. এনায়েত হোসেন মুক্তিযুদ্ধে যোগদানে মনস্থির করেন। তিনি অন্যদের সঙ্গে ভারতে গিয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১১নং সেক্টরের মহেন্দ্রগঞ্জ সাব- সেক্টরে তিনি বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ নেন। তাঁর গ্রুপ কমান্ডার ওয়ালিউজ্জামান আশরাফীর নেতৃত্বে তিনি বকশীগঞ্জ এলাকায় বিভিন্ন যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। জামালপুরের কামালপুর যুদ্ধ ছিল তাঁর জীবনে বড় ঘটনা। ১১নং সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু তাহেরের নেতৃত্বে ১৪ই নভেম্বর পাকিস্তানি শত্রুঘাঁটির ওপর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণ পরিচালিত হয়। তাতে এনায়েত হোসেন সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, এখানকার যুদ্ধে শত্রুর গোলার আঘাতে মেজর তাহেরের একটি পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তিনি মারাত্মভাবে আহত হওয়ার পরও যেসব মুক্তিযোদ্ধা লড়াইয়ের মাঠ ত্যাগ করেননি, এনায়েত হোসেন ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মো. এনায়েত হোসেনকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মোসাম্মৎ হামিদা খানম। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড