বীর প্রতীক মো. খলিলুর রহমান
মো. খলিলুর রহমান, বীর প্রতীক (১৯৩২-১৯৯৮) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩২ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর শরিয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার কুড়ালতলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. খবির উদ্দিন আহমেদ এবং মাতার নাম আম্বিয়া খাতুন। তিনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বাহিনীতে চাকরির মধ্য দিয়ে খলিলুর রহমানের কর্মজীবন শুরু হয়। ১৯৫২ সালে তিনি ইপিআর-এ যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কুষ্টিয়া জেলার চুয়াডাঙ্গায় ৪ নম্বর উইং-এ কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তিনি হাবিলদার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন।
খলিলুর রহমানের সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী, বীর বিক্রম ও এ আর আজম চৌধুরী এবং কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন আব্দুল মজিদ মোল্লা। তিনি নিজে গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৩০শে মার্চ কুষ্টিয়া শহরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে তিনি অংশ নেন। ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ ও বিষয়খালিতে সংঘটিত প্রতিরোধ যুদ্ধেও তিনি অংশগ্রহণ করেন। খলিলুর রহমান কুষ্টিয়ার কাজীপুর, ধর্মদাহ, লালগোলাসহ বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানি সৈন্য ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন। সেক্টরভিত্তিক যুদ্ধ শুরু হলে খলিলুর রহমান ৮ নম্বর সেক্টরের শিকারপুর সাব-সেক্টরের হয়ে যুদ্ধ করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার খলিলুর রহমানকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে (গেজেট নম্বর ৪৫৬, খেতাবের সনদ নম্বর ২০৬)।
মুক্তিযুদ্ধের পর খলিলুর রহমান বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস)-এ যোগদান করেন। বিডিআর থেকে অবসর নিয়ে তিনি ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। তিনি ২ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম খাদিজা বেগম। খলিলুর রহমান ১৯৯৮ সালের ১লা জুলাই ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। [জালাল আহমেদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড