You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. খসরু মিয়া - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. খসরু মিয়া

মো. খসরু মিয়া, বীর প্রতীক (১৯৫১-১৯৮৭) কাদের সিদ্দিকীর বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৫১ সালে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার রতনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রোকনউদ্দিন এবং মাতার নাম খাতেমন নেছা।
কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া খসরু মিয়া ৭১-এ ছিলেন ২০ বছরের এক টগবগে যুবক। ২৫শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যায় ঝাঁপিয়ে পড়লে তিনি টাঙ্গাইলে হানাদারদের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবক- জনতা সমন্বয়ে প্রতিরোধ সংগ্রামে যোগ দেন। কিছুদিনের মধ্যে কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে স্থানীয়ভাবে এক শক্তিশালী মুক্তিবাহিনী গড়ে উঠলে তিনি তাতে যোগ দিয়ে কোম্পানি কমান্ডার খোরশেদ আলমের নিকট অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। খোরশেদ আলমের অধীনে তাঁকে গ্রুপ কমান্ডারের দায়িত্ব দেয়া হয়। তাঁর নেতৃত্বে তিনি গোপালপুর, ভূঞাপুর, ধলাপাড়া, কালিহাতী, ভূঞাপুর থানার সিরাজকান্দি ইত্যাদি স্থানে গেরিলা আক্রমণ, এম্বুশ ও সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৪ই আগস্ট ঘাটাইল উপজেলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত গর্জনা গ্রামে পাকসেনাদের সঙ্গে কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের এক সংঘর্ষ হয়। গর্জনা গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা আশ্রয় নেয়ার পর কাদের সিদ্দিকী লক্ষ করেন ঘাটাইলের দিক থেকে ৮-১০টি নৌকা আসছে। তাতে পাকসেনা বোঝাই। কাদের সিদ্দিকী সঙ্গে-সঙ্গে ২০ জন বাছাই করা সাহসী যোদ্ধাকে নিয়ে পাকসেনাদের প্রতিরোধ করার জন্য অবস্থান নেন। এখানে কোম্পানি কমান্ডার খোরশেদ আলমের দলে থেকে খসরু মিয়া যুদ্ধ করে সাহসিকতার পরিচয় দেন। যুদ্ধে খোরশেদ আলম আহত হন। পাকসামরিক বাহিনীর অস্ত্র বোঝাই দুটি জাহাজ দখলে ভূঞাপুরের সিরাজকান্দির যুদ্ধ (১১ই আগস্ট)-এও খসরু মিয়া সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তরুণ মুক্তিযোদ্ধা খসরু মিয়া-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৮৭ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর স্ত্রীর নাম হালিমা খাতুন। এ দম্পতি ২ কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানের জনক-জননী। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড