বীর বিক্রম মো. আমান উল্লাহ
মো. আমান উল্লাহ, বীর বিক্রম নায়েক সুবেদার ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত বেগমগঞ্জ উপজেলার জনদপুর ইউনিয়নের হাটগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ইসমাইল মিয়া। তিনি স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন।
মো. আমান উল্লাহ ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩য় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে নায়েক সুবেদার পদমর্যাদায় সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত ছিলেন। ২৭শে মার্চ পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর ক্যাপ্টেন আনোয়ারের নেতৃত্বে তিনি বিভিন্ন প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রিগেড হিসেবে ‘জেড’ ফোর্স গঠিত হলে ৩য় বেঙ্গল রেজিমেন্টকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়। কিন্তু আমান উল্লাহ ‘জেড’ ফোর্সে যুক্ত না হয়ে ৭ নম্বর সেক্টরে থেকে যুদ্ধ করেন। ডিসেম্বর মাসে যৌথবাহিনী পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও মুক্ত করার পর দিনাজপুর দখলের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হলে আমান উল্লাহ যৌথ কমান্ডে যুদ্ধ করেন। ১৩ই ডিসেম্বর যৌথবাহিনী পাকবাহিনীর শক্ত ঘাঁটি খানসামা আক্রমণ করলে সেখানে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। যুদ্ধরত অবস্থায় আমান উল্লাহ শত্রুর গুলিতে শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করাসহ তাঁর বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘বীর বিক্রম’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।
মো. আমান উল্লাহ ৩ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম মিসেস সালেমা খাতুন। [হারুন রশীদ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড