You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক মো. আমিন উল্লাহ

মো. আমিন উল্লাহ, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৩৪) যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৩৪ সালে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রমজান আলী ও মাতার নাম আফিজা খাতুন। তাঁর স্ত্রীর নাম হাজরা খাতুন।
১৯৭১ সালে মো. আমিন উল্লাহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সিপাই পদে চাকরি করতেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল কুমিল্লা সেনানিবাস। সেখানে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ প্রচার করে যে, মার্চ মাসে ভারত পাকিস্তান আক্রমণ করতে পারে। এ অজুহাত দেখিয়ে তাদের প্রতিরোধ করার জন্য চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বেশির ভাগ সেনাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেটের শমশেরনগরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। আমিন উল্লাহকেও তাঁদের সঙ্গে পাঠানো হয়, তবে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পক্ষ ত্যাগ করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি নিয়মিত মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধ করেন। তিনি মূলত আখাউড়া ও এর আশেপাশে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ করেন। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য যুদ্ধক্ষেত্র ছিল কুমিল্লা রেলস্টেশন থেকে আখাউড়ার পথে মধ্যবর্তী এলাকা। সীমিত অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা এ এলাকায় প্রায়ই পাকিস্তানি সেনাদের ওপর চোরাগোপ্তা হামলা পরিচালনা করেন এবং কোনো-কোনো সময় শত্রুপক্ষের পাল্টা আক্রমণ সম্মুখ যুদ্ধে রূপ পায়। অধিকাংশ সময়ই মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি সেনাদের কিছু হটাতে সক্ষম হন। এমনি এক যুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্ধার করে নিজ ক্যাম্পে ফেরার পথে পাকিস্তানি সেনাদের পুঁতে রাখা মাইনে পা পড়লে মাইনটি বিস্ফোরিত হয় এবং আমিন উল্লাহর বাঁ পায়ের হাঁটু পর্যন্ত উড়ে যায়। সহযোদ্ধারা তাঁকে উদ্ধার করে ফিল্ড হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন|
মুক্তিযুদ্ধে পা হারানো মো. আমিন উল্লাহর বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। [এস এম মাহফুজুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!