বীর প্রতীক মো. ইদ্রিস
মো. ইদ্রিস, বীর প্রতীক (১৯৪৮-২০০৩) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৮ সালের ২৪শে ডিসেম্বর ফেনী জেলার সদর উপজেলার মধ্যম ধলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সোনা মিয়া ও মাতার নাম আমেনা খাতুন। তাঁর স্ত্রীর নাম সাফিয়া খাতুন।
১৯৭১ সালে মো. ইদ্রিস পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে হাবিলদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে বছর মার্চ মাসে তিনি ছুটিতে ছিলেন এবং স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হলে তিনি চাকরিতে ফিরে না গিয়ে প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি ২ নম্বর সেক্টরের রাজনগর সাব-সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধে মো. ইদ্রিস যেসব অপারেশনে অংশ নেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ফেনী জেলার পরশুরাম ও ফুলগাজী থানায় অবস্থিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘাঁটি আক্রমণ। এসময় অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে একত্রে পাকিস্তানি সেনাদের বিভিন্ন অভিযান প্রতিরোধ করাও ছিল তাঁর নিয়মিত তৎপরতার অংশ। প্রতিরোধযুদ্ধের একটিতে মো. ইদ্রিস ও তাঁর সহযোদ্ধারা ফেনী-বিলোনিয়া সড়কের এক জায়গায় এম্বুশ পেতে সেখান দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণ করেন। এ আক্রমণে ৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা দুজন পাকিস্তানি সেনাকে বন্দি করেন। অনেক অস্ত্রশস্ত্র তাঁদের হস্তগত হয়। এছাড়া, ইদ্রিস আলী ও তাঁর দলের সদস্যরা শালধরেও পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। শত্রুদের তুলনায় অনেক কম অস্ত্রশস্ত্র নিয়েই শত্রুদের পর্যুদস্ত করতে সক্ষম হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা মো. ইদ্রিস-কে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সফল সমাপ্তির পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি ২০০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। [এস এম মাহফুজুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড