You dont have javascript enabled! Please enable it!

বীর প্রতীক মো. ইদ্রিস মিয়া

মো. ইদ্রিস মিয়া, বীর প্রতীক (১৯২৫-১৯৯০) সুবেদার মেজর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯২৫ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার নীলগঞ্জের বড় কাপন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতার নাম সোনাতুন্নেছা এবং পিতার নাম মো. মিয়া হোসেন।
মো. ইদ্রিস মিয়া ১৯৪৩ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৪৭ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একীভূত হন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি কুমিল্লা সেনানিবাসের ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সুবেদার মেজর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে রেজিমেন্টের চার্লি ও ডেল্টা কোম্পানিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়। ২৭শে মার্চ মেজর শাফায়াত জামিল, বীর বিক্রমএর নেতৃত্বে কোম্পানি দুটি বিদ্রোহ করে। এ বিদ্রোহে মো. ইদ্রিস মিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। পরবর্তীতে ১০ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠিত হলে তাঁকে এ রেজিমেন্টে যুক্ত করা হয়। ব্রিগেড ফোর্স গঠিত হলে এবার তাঁকে ‘কে’ ফোর্সের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ শেষে ডিসেম্বর মাসে ‘কে’ ফোর্স ও মিত্রবাহিনী চট্টগ্রামের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১৩ই ডিসেম্বর তাঁরা চট্টগ্রামের কুমিরা নামক স্থানে পৌঁছান। সেখানে প্রায় ২০ ঘণ্টা পাকবাহিনীর সঙ্গে তাঁদের প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। ১৪ই ডিসেম্বর রাত ৩টায় পাকবাহিনী পরাস্ত হয়ে চট্টগ্রামের দিকে চলে যায় এবং কুমিরা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসে। এ যুদ্ধে ইদ্রিস মিয়া বীরত্ব ও সাহসিকতার পরিচয় দেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহস ও বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মো. ইদ্রিস মিয়াকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। দেশ স্বাধীন হলে তিনি অনারারি ক্যাপ্টেন পদমর্যাদায় উন্নীত হন। তিনি ১১ কন্যা ও ৫ পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর স্ত্রীর নাম রেনোয়ারা বেগম। ১৯৯০ সালের ২৫শে জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। [হারুন রশীদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!