বীর প্রতীক মো. আব্দুল গফুর
মো. আব্দুল গফুর, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৫) যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কাদেরিয়া বাহিনী-র কোম্পানি কমান্ডার। তিনি ১৯৪৫ সালে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম গজনবি এবং মাতার নাম বাছাতন।
মো. আব্দুল গফুর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সৈনিক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে তাঁর কর্মস্থল ছিল কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপর তিনি তাতে যোগ দেন এবং কাদেরিয়া বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর (৮ই অক্টোবর), সিরাজকান্দি (১১ই আগস্ট), কালিহাতী (২২শে মে), দেওপাড়া (১০ই ডিসেম্বর), এলেঙ্গা (৩রা ডিসেম্বর), ধলাপাড়া (২৮শে অক্টোবর), মাকড়াই (১৬ই আগস্ট), বল্লা (১২ই জুন) ইত্যাদি যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২৮শে অক্টোবর পাকসেনারা ধলাপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। এর পূর্বে হাবিবুর রহমান ও কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল গফুর ধলাপাড়ার কাছাকাছি ৪০-৫০ জন সহযোদ্ধা নিয়ে অবস্থান নেন। দুপুরের দিকে একদল পাকসেনা তাঁদের আওতার মধ্যে আসার সঙ্গে-সঙ্গে শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিবর্ষণ। মুহূর্তে লুটিয়ে পড়ে বেশকিছু পাকসেনা ও রাজাকার। ঘাটাইল উপজেলার মাকড়াইর যুদ্ধে পাকবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাদের কয়েকজন নিহত এবং অনেকে আহত হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর পাকসেনারা নিহত সেনাদের মরদেহ ফেলে আহতদের নিয়ে পালিয়ে যায়। ফুলবাড়িয়ার যুদ্ধে আব্দুল গফুর বহু -আলবদর, আলশামস ও রাজাকার কে হত্যা করেন। এখানে তিনি নিজে আহত হন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মো. আব্দুল গফুরকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ২ কন্যা ও ৪ পুত্র সন্তানের জনক। তার স্ত্রীর নাম লাইলী বেগম। [শেখ সাইয়েদুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড