You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মো. আবদুল হাকিম - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মো. আবদুল হাকিম

মো. আবদুল হাকিম, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪২) হাবিলদার, কাদেরিয়া বাহিনী-র কোম্পানি কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪২ সালের ১লা জানুয়ারি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার কিংনা ইউনিয়নের মেদুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মাসুদ আলী মুন্সি এবং মাতার নাম মর্তবান নেছা। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে তিনি ৪র্থ।
মো. আবদুল হাকিম ১৯৬০ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬২ সালের ৩১শে ডিসেম্বর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে তিনি জয়দেবপুরে দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টে হাবিলদার পদমর্যাদায় কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি মেজর কে এম সফিউল্লাহ, বীর উত্তম-এর নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলের অন্য সৈনিকদের সঙ্গে বিদ্রোহ করে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ভৈরব, মাধবপুর প্রভৃতি এলাকায় প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দেন। মে মাসের শেষদিকে তিনি পরিবারের খোঁজ নেয়ার জন্য নিজ এলাকায় আসেন। এ- সময় আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, বীর উত্তম-এর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। কাদের সিদ্দিকীর অনুরোধে ১৯শে মে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগ দেন এবং এ বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার হন। যুদ্ধ পরিচালনার জন্য মো. আবদুল হাকিম কাদেরিয়া বাহিনীর উত্তর টাঙ্গাইলের দায়িত্ব পালন করেন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথমদিকে তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর অনেক সদস্যকে নিয়ে ভারতে যান। ২৫শে সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। তিনি টাঙ্গাইলের দেওপাড়া, ধরলাপাড়া, সাগরদিঘী, ঘাটাইল, ভূঞাপুর, ইছাপুর, সরিষাবাড়ির দুলভিটিসহ অনেকগুলো জায়গায় পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। এর মধ্যে ইছাপুর যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য।
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলায় ইছাপুরের অবস্থান। ১৪ই ডিসেম্বর ইছাপুরের গোরস্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রাক্কালে এ যুদ্ধে মো. আবদুল হাকিমের কোম্পানি হানাদারদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে এবং অনেক পাকিস্তানি সৈন্যকে হতাহত করে। এ যুদ্ধে মো. আবদুল হাকিম সাহসিকতার পরিচয় দেন|
মহান মুক্তিযুদ্ধে হাবিলদার মো. আবদুল হাকিমের অসামান্য সাহস ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। তাঁর স্ত্রীর নাম মোছা. শামসুন্নাহার। এ দম্পতির ৪ কন্যা ও ৩ পুত্র সন্তান রয়েছে। [মনিরুজ্জামান শাহীন]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড