বীর বিক্রম মো. আবুল কাসেম ভূঁইয়া
মো. আবুল কাসেম ভূঁইয়া, বীর বিক্রম (১৯৫১- ১৯৭১) ছাত্রাবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগদানকারী শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা। চাঁদপুর জেলাধীন শাহরাস্তি উপজেলার অন্তর্গত উত্তর সুচিপাড়া ইউনিয়নের বড়ুয়া গ্রামে ১৯৫১ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাজী মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া এবং মাতার নাম শরিয়তের নেছা। মো. আবুল কাসেম ভূঁইয়া ১৯৭১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া দিয়ে আবুল কাসেম ভূঁইয়া ২নং সেক্টরের অধীনে স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২০শে এপ্রিল থেকে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এপ্রিল মাসে ২নং সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ কুমিল্লার বিবিরবাজার এলাকায় যে শক্তিশালী যুদ্ধ পরিচালনা করেন, তাতে শত্রুবাহিনীর ১৫০ জনের মতো সদস্য হতাহত হয়। এ যুদ্ধে আবুল কাসেম শত্রুদের গুলি করতে-করতে উত্তেজিত অবস্থায় এক পর্যায়ে ‘জয় বাংলা’ হুংকার দিয়ে দাঁড়িয়ে যান। ঠিক সে মুহূর্তে হঠাৎ তাঁর মাথায় শত্রুপক্ষের গুলি লাগলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এরপর শত্রুরা চতুর্দিক থেকে মুক্তিবাহিনী-র অবস্থান ঘিরে ফেললে সেক্টর কমান্ডার বাধ্য হয়ে পশ্চাদপসরণ করেন। এ যুদ্ধে আবুল কাসেমসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ এবং ৮-১০ জন আহত হন। মুক্তিবাহিনীর অন্য যোদ্ধারা পরে শহীদদের ভারতের মাটিতে সমাহিত করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ বীরত্ব প্রদর্শন ও জীবন উৎসর্গ করায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক শহীদ মো. আবুল কাসেম ভূঁইয়াকে ‘বীর বিক্রম’ (মরণোত্তর) খেতাবে ভূষিত করা হয়। তিনি ছিলেন অবিবাহিত। [মুহম্মদ সায়েদুর রহমান তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড