You dont have javascript enabled! Please enable it! মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠ বধ্যভূমি (মেহেরপুর সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠ বধ্যভূমি (মেহেরপুর সদর)

মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠ বধ্যভূমি (মেহেরপুর সদর) মেহেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৮ই এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা থেকে মেহেরপুরে প্রবেশ করে। মেহেরপুরে প্রবেশের পথে তারা আমঝুপি গ্রাম ও মেহেরপুর শহরের ওয়াপদা মোড়ে গণহত্যা চালায়। এদিনই তারা মেহেরপুর সিও অফিসে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। পরবর্তীতে ১৯ ও ২০শে এপ্রিল শহরের পূর্ব প্রান্তে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া প্রধান সড়কের পাশে মেহেরপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে তাদের মূল ঘাঁটি স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কলেজের বিজ্ঞান ভবনের নিচতলা ইন্টারোগেশন সেল হিসেবে ব্যবহার করে এবং অনতিদূরে কলেজ হোস্টেলকে কসাইখানা বানায়। মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠটি ছিল এ জেলার সবচেয়ে বড় বধ্যভূমি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকারদালালদের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাধীনতাকামী ৫ শতাধিক নারী-পুরুষকে এ ঘাঁটিতে এনে আটক করে রাখে। তারপর নির্যাতন শেষে হত্যা করে তাদের লাশ এ বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়। স্বাধীনতার পর এ বধ্যভূমিতে অসংখ্য মানুষের ছিন্ন-ভিন্ন দেহ, মাথার খুলি, হাড়গোড়, নারীদের মাথার চুল ও কাপড়-চোপড় পাওয়া যায়। এ-সময় শহীদদের আত্মীয়- স্বজনদের অনেকেই তাদের প্রিয়জনের লাশ শনাক্ত করতে মেহেরপুর সরকারি কলেজ মাঠ বধ্যভূমিতে ছুটে আসে। কিন্তু লাশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অতঃপর স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা শহীদদের গলিত দেহাবশেষ একত্রিত করে কলেজের দক্ষিণে মেহেরপুর- চুয়াডাঙ্গা সড়কের পাশে গর্ত খুঁড়ে গণকবরে সমাহিত করা হয়। শহীদদের স্মরণে গণকবরের পাশে ‘প্রজ্জ্বলিত দীপশিখা’ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। [শফিউদ্দিন তালুকদার]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড