মেহেন্দীগঞ্জ গার্লস স্কুল সংলগ্ন ব্রিজ গণহত্যা (মেহেন্দীগঞ্জ, বরিশাল)
মেহেন্দীগঞ্জ গার্লস স্কুল সংলগ্ন ব্রিজ গণহত্যা (মেহেন্দীগঞ্জ, বরিশাল) ১৭ই নভেম্বর সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এ গণহত্যায় অর্ধশতাধিক মানুষ শহীদ হন।
১৭ই নভেম্বর সকাল ১০টায় মেহেন্দীগঞ্জ থানায় অবস্থান নেয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় উলানিয়া বাজার ও পাতারহাট বন্দর লুণ্ঠন শেষে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারপর গার্লস স্কুলের ব্রিজের গোড়ায় খালের পাড়ে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষক এবং সমাজের নেতৃস্থানীয় লোকজনসহ অর্ধশতাধিক মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান এ গণহত্যার একজন প্রত্যক্ষদর্শী। গণহত্যার শিকার এ সকল শহীকে স্থানীয় রাজাকাররা বিভিন্ন জায়গা থেকে ধরে এনে পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে তুলে দেয়। উপজেলা সদর প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ নির্মম গণহত্যায় শহীদ হন। হানাদার বাহিনী সকলকে দড়ি দিয়ে বেঁধে খালের পাড়ে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। শহীদদের লাশগুলো খালের মধ্যে ব্রিজের গোড়ায় পড়ে থাকে। একদিন পর স্থানীয় লোকজন পরিচিতদের তাদের নিজ-নিজ বাড়িতে নিয়ে দাফন করে। দূর-দূরান্ত থেকে ধরে আনায় অনেক শহীদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তাদের লাশ খালের পানিতে ভেসে যায়। এ গণহত্যায় শহীদ ১০ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন— আবুল হাশেম মাস্টার (৪৫) (পিতা মোহাম্মদ হোসেন; প্রধান শিক্ষক, পাতার হাট আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়), সারদা কান্তি বিশ্বাস (বদরপুর), নূর মোহাম্মদ জমাদ্দার (অম্বিকাপুর), গোষ্ঠবিহারী নন্দী (অম্বিকাপুর), দলিল উদ্দিন বেপারী (বদরপুর), আবুল কাশেম (৩৫) (অম্বিকাপুর), তোতা খন্দকার (৪০) (চরহোগলা), আবদুর রব (৩৫) (চরহোগলা), ইসমাইল ফকির (৪৫) (চরহোগলা) ও হাশেম ফকির (৪০) (চরহোগলা)। [মনিরুজ্জামান শাহীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড