You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় গণকবর (শৈলকুপা, ঝিনাইদহ) - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় গণকবর (শৈলকুপা, ঝিনাইদহ)

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় গণকবর (শৈলকুপা, ঝিনাইদহ) শৈলকুপা উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে কুমার নদের দক্ষিণ পাশে ব্রিজের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। এ গণকবরটিকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বর্তমান শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়। ঝিনাইদহ জেলা সদর থেকে শৈলকুপা বাজারে ঢুকতেই বামে পড়ে এ গণকবরটি। বর্তমানে এখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৪ই অক্টোবর আবাইপুরের যুদ্ধ-এ এম্বুশরত অবস্থায় পাকবাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে নির্মমভাবে শহীদ হন সহযোগীসহ ৪১ জন মুক্তিযোদ্ধা। ঐদিন রাতে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে শৈলকুপা রাজাকার ক্যাম্পে ধরে আনা হয় এবং সকালের দিকে তাঁদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে-খুঁচিয়ে হত্যা করে নদীর ভাঙনে গর্ত করে একই সঙ্গে মাটিচাপা দেয়া হয়। বর্বর হানাদার বাহিনী তাঁদের কাফন এবং জানাযা কোনোটাই করতে দেয়নি। এ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও দেবতলা গ্রামের ইকবাল, বারইপাড়া গ্রামের শাহজাহান, শ্যামপুর গ্রামের আদালত এবং শৈলকুপা গ্রামের ডাক্তার মনোরঞ্জনকে গুলি করে ব্রিজের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে উক্ত স্থানে মাটিচাপা দেয়া হয়। এছাড়া শৈলকুপার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসংখ্য লোককেও ধরে এনে হত্যার পর মাটিচাপা দেয়া হয়।
যে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধাকে আবাইপুর যুদ্ধ থেকে ধরে এনে কবর দেয়া হয়, তাঁরা হলেন: মো. মকছেদ আলি (পিতা আদালত মণ্ডল, বরিয়া), মো. রুস্তম আলী (পিতা আব্দুল জব্বার, মাধবপুর), মো. বাবুর আলী (পিতা আশরাফ আলী, কাজীপাড়া), মো. চেতন আলী (পিতা হাশেম জোয়ার্দার, জালশুকা), মো. সীমার আলী (পিতা শাহাদৎ আলী মন্ডণ্ড, বরিয়া) এবং মো. আজিবর হোসেন (পিতা জবেদ আলী, খাসবগদিয়া)। এঁরা সকলেই শৈলকুপা উপজেলার অধিবাসী।
২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এবং ১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ এখানকার স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ-বিশেষ অনুষ্ঠান এখানে অনুষ্ঠিত হয়। [মো. আব্দুল ওহাব]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড