মুগরুল গণহত্যা (মোহনপুর, রাজশাহী)
মুগরুল গণহত্যা (মোহনপুর, রাজশাহী) সংঘটিত হয় ১৮ই নভেম্বর। এ গ্রামে পাকিস্তানি সেনারা ১৫ জন নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এর আগে কমান্ডার শফিকুর রহমান রাজার নেতৃত্বে হারুন, হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এখানকার দুয়ারী ব্রিজটি এক্সপ্লোসিভ বোমার সাহায্যে ধ্বংস করে দেন। এ ঘটনার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য পরদিন দাউদ মৌলভী (বেড়াবাড়ি), নূরে আলম (বেড়াবাড়ি), শামসুউদ্দিন হাজী (বেড়াবাড়ি) প্রমুখ রাজাকারের সহায়তায় পাকবাহিনী মুগরুল গ্রাম ঘেরাও করে ১৫ জন নিরীহ মানুষকে আটক করে। তারপর তাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে। এ গণহত্যায় শহীদরা হলেন- নজর উদ্দিন শেখ, ইদ্রিস আলী শেখ, হাবিবুর রহমান শেখ, রশিদ শেখ, জেকের আলী শেখ, বশির উদ্দিন শেখ, মফির উদ্দিন খাঁ, মফিজ উদ্দিন খাঁ, ইয়ানুছ আলী খাঁ, নূরুজ্জামান মন্ডল, শেকু সরদার, কুসব আলী (মদনহাটি), মেছের আলী (ঐ), রিয়াজ উদ্দিন সরকার (ঐ) এবং বদ্ধিনাথ ঋষি (ঐ)।
পাকসেনা ও রাজাকাররা গ্রাম ঘেরাও করলে মুগরুল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার শেখ মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী পশ্চিম পাশের দীঘল খালে বাতরাজ (কলমিলতার মতো এক ধরনের লতা) বেষ্টিত পানিতে ডুব দিয়ে আত্মরক্ষা করেন। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে তাঁর ভাই ইদ্রিস শেখ (পিতা কবির উদ্দিন শেখ), হাবিব শেখ (পিতা ছবির শেখ) এবং নজর শেখ (পিতা হাবিল শেখ)-কে তারা হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর পাকসেনা ও রাজাকাররা চলে গেলে গ্রামবাসী নিহতদের দাফন করে। মুগরুল গ্রামে শহীদদের স্মরণে একটি নামফলক স্থাপন করা হয়েছে। [আখতারুজ্জাহান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড