মুক্তিরহাট গণকবর (ডোমার, নীলফামারী)
মুক্তিরহাট গণকবর (ডোমার, নীলফামারী) নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার চিলাহাটি থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। সীমান্তবর্তী হওয়ায় মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি মুক্তাঞ্চল ছিল। তিনজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিরহাট গণকবরে কবর দেয়া হয়। রংপুরে বাড়ি হওয়ায় তাঁদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তাঁরা টুনিরহাটে পাকবাহিনীর ক্যাম্প দখলের যুদ্ধে শহীদ হন।
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইকবাল রশিদের নেতৃত্বে ডিমলা হাইস্কুলের শিক্ষক মহিকুল ইসলাম বিএসসি-র সহযোগিতায় মুক্তিবাহিনীর তিনটি কোম্পানি একত্রে পাকবাহিনীর শক্ত ঘাঁটি টুনিরহাট আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাকবাহিনীর প্রায় ১৫০ জন সৈন্য ভারী অস্ত্রসহ এখানে অবস্থান করছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের দল সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফজরের আযানের সময় টুনিরহাট ক্যাম্প আক্রমণ করে এবং পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে অংশ নেয় মো. শমশের আলী, রংপুরের কোম্পানি কমান্ডার অপিল উদ্দিন ও গোলাপের নেতৃত্বে তিনটি দল। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকবাহিনী পিছু হটে এবং ওয়ারলেসের মাধ্যমে ডোমার ও কিশোরগঞ্জ সেনা ক্যাম্প থেকে সহযোগিতা চায়। এ আক্রমণে পাকবাহিনীর ৮০ জন সৈন্য নিহত এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের টুনিরহাট ক্যাম্প আক্রমণের পূর্বে পাকবাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান পরিবর্তন করে পিছু হটেন। এ-সময় তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাঁদের মুক্তিরহাট গণকবরে কবর দেয়া হয়। [আহম্মেদ শরীফ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড