মির্জাপুর গণহত্যা (টাঙ্গাইল)
মির্জাপুর গণহত্যা (টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় ৭ই মে টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে মির্জাপুর সদর উপজেলার অন্তর্গত মির্জাপুর গ্রামে। এদিন মির্জাপুর শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান কুখ্যাত আলবদর আবদুল অদুদ মাওলানা ও তার পুত্র রাজাকার কমান্ডার মাহবুব মাওলানার আহ্বানে টাঙ্গাইল ক্যাম্প থেকে ক্যাপ্টেন আইয়ুবের নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাদের এক বিশাল দল মির্জাপুর আসে। তারা তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে দুপুরের পরপর মির্জাপুর গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে এবং নির্মম গণহত্যা চালায়। পাশাপাশি লুটতরাজ ও বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। সন্ধ্যা পর্যন্ত এ পৈশাচিক কর্মকাণ্ড চলে। পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা সেদিন মির্জাপুরের পার্শ্ববর্তী আন্ধরা, সরিষাদাইর, দুর্গাপুর, বাইমহাটী, পোস্টকামুরী, কাষ্ঠালিয়া প্রভৃতি গ্রামেও গণহত্যা চালায়। এ গণহত্যায় মির্জাপুর গ্রামের কমল সাহা, মধুসূদন সাহা, সুভাস সাহা, উমাচরণ সাহা, ধীরেন্দ্রনাথ সাহা, গদাধর সাহা, কেরু শীল, যুগল চন্দ্র বণিক, গোপাল চন্দ্র বণিক, গণেশ চন্দ্র বণিক, মঙ্গল চন্দ্র সাহা, ভাদুরী সূত্রধর, রামচন্দ্র সাহা, সুপতি বণিক, স্বপন সাহা, আনন্দ সাহা, নারায়ণ মণ্ডল (ভুষা মণ্ডল), বলাই চন্দ্ৰ সাহা, চাঁন মোহন সাহা, বকুল সাহা, রংলাল সাহা, দ্বীজেন্দ্র সাহা, রণজিৎ সাহা দুলাল, সূর্যেন্দ্রনাথ পোদ্দার (কালু পোদ্দার), ফণীন্দ্রনাথ সাহা, আন্ধরা গ্রামের গৌর গোপাল সাহা, গঙ্গাচরণ সাহা, পদ সাহা, বান্দু গোপ, সরিষাদাইর গ্রামের ভবেন্দ্র সাহা, রঞ্জিত সাহা, গণেশ চন্দ্র মণ্ডল, নিতাই চন্দ্র মণ্ডল, ভোলানাথ সাহা, নিতাই চন্দ্র কর্মকার, দুর্গাপুর গ্রামের কানাই লাল সাহা, রাখাল চন্দ্র সাহা, ভেবল মণ্ডল, বাইমহাটী গ্রামের রণজিৎ সাহা, নগীনা বাসফৈর, পোস্টকামুরী গ্রামের জয়নাল আবেদীন, মাজম আলী, কাষ্ঠালিয়া গ্রামের জগদীশ চন্দ্র বকসী, অমল কুমার বকসী অমু, যতীন্দ্র মোহন শীল ও সাধু মালী শহীদ হন। এ সব শহীদের স্মরণে একটি নামফলক বসানো রয়েছে। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড