মুক্তিযুদ্ধে মিরপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া)
মিরপুর উপজেলা (কুষ্টিয়া) ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে শাসনক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্র শুরু করে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ৩রা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করে ১লা মার্চ হঠাৎ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য তা স্থগিত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। শুরু হয় পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন। ২রা ও ৩রা মার্চ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সারা দেশব্যাপী হরতাল পালন করা হয়। একই সঙ্গে চলতে থাকে অসহযোগ আন্দোলন। ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ এদেশের সর্বস্তরের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। ২৫শে মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বহু সাধারণ মানুষ, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, পুলিশ ও ইপিআর-কে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঐ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার আগেই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় সারা দেশব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। মিরপুর উপজেলার সর্বস্তরের দেশপ্রেমী জনগণ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও স্বাধীনতার ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেয়।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৭ বেলুচ রেজিমেন্টের ১৭৭ জন সেনাসদস্য ২৫শে মার্চ যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে কুষ্টিয়ায় পৌঁছায়। তারা প্রথমে পুলিশ স্টেশনগুলো দখল করে নেয় এবং সেগুলো সেনা ফাঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে।
এরপর তারা কুষ্টিয়া জেলা স্কুল (স্থায়ী ক্যাম্প), কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স, মোহিনী মিলসের ওয়ারলেস এবং গোয়ালগ্রামের গড়ুলা হাইস্কুলে (দৌলতপুর) ক্যাম্প স্থাপন করে। ইপিআর অফিসার ক্যাপ্টেন আজম চৌধুরী মিরপুরের নেতৃস্থানীয়দের এ সংবাদ জানালে
আইলচারা বাগানে (পোড়াদহ, মিরপুর) হানাদারদের প্রতিরোধের প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণসহ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। প্রশিক্ষণে First Aid Box দেয়া হয়। মেডিকেল প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে পোড়াদহের ডাক্তার মোহাম্মদ সাঈদ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।
স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ ও একাধিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়। মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ ও তাঁদের সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে মো. মকবুল হোসেন (মিরপুর উপজেলার যুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার), মো. খালেদ সাইফুদ্দিন তারেক, বীর বিক্রম-, মো. আইয়ুব (যুদ্ধাহত), মো. মকছেদ আলী মাস্টার (আওয়ামী লীগ নেতা) বিশেষ ভূমিকা রাখেন। পরবর্তীকালে এঁরাই মিরপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। ৩১শে মার্চ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আফতাব উদ্দিন খানের নেতৃত্বে শতাধিক মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা বর্তমান মাহমুদা চৌধুরী কলেজ রোডের পোস্ট অফিস সংলগ্ন মসজিদে মুক্তিযুদ্ধের শপথ গ্রহণ করেন।
রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ শুনে মো. জহুরুল হক মণ্ডলসহ কয়েকজন তরুণ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে যান। প্রথমে তাঁরা শিকারপুরে রিক্রুট হয়ে করিমপুরে যান। করিমপুরে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে কড়াইগাছি এবং সেখানে রিক্রুট হয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য রামপুরহাট ক্যান্টনমেন্টে যান। রামপুরহাটে এক মাসের প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
মিরপুর উপজেলার যুদ্ধকালীন কমান্ডার ছিলেন মো. নাজমুল করিম সুফি (থানা বিএলএফ কমান্ডার, নওদাপাড়া), মারফত আলী (জেলা বিএলএফ কমান্ডার, জাসদ নেতা, মালিহাদ), মো. আফতাব উদ্দিন খান (পাহাড়পুর, চিথলিয়া) ও মো. রেজাউল করিম (নওদাখাড়ারা)। এখানকার গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন— মকছেদ আলী (আহাম্মদপুর), ইয়াছিন সর্দার (হিদিরামপুর), হাবিবুর রহমান (মশান), মো. মকবুল হোসেন (মাঝিহাট, হালসা), সিরাজুল ইসলাম পিন্টু (নগররাখা, হালসা), কোরবান আলী (বাজিতপুর), মো. শফিউল ইসলাম মজনু (আমবাড়ীয়া), আইউব আলী (কাটদহ, পোড়াদহ), সাইফুল ইসলাম গামা (বহলবাড়িয়া), মোজাম্মেল হোসেন (রানাখড়িয়া), হযরত আলী (খাদিমপুর), লোকমান হোসেন (জাসদ নেতা, তালবাড়ীয়া) ও আব্দুল হান্নান (হালসা)।
৩০শে মার্চ ভোর ৪টায় মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (ইপিআর চুয়াডাঙ্গা ৪নং উইং ও পরবর্তীতে ৮নং সেক্টর কমান্ডার)-এর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্স ও কুষ্টিয়া জেলা স্কুলে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হয় এবং ৩ দিন ধরে তা চলে। মুক্তিকামী জনতা পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শুরু করলে তারা তাদের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে তিনটি ডজ গাড়িতে করে গুলি বর্ষণ করতে-করতে যশোরের দিকে পালিয়ে যায়। বিক্ষুদ্ধ জনতা ও মুক্তিবাহিনীর হাতে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। পাকবাহিনীর ৬ জন সদস্য মিরপুরের দিকে পালিয়ে আসার সময় মশান বাজার সংলগ্ন এলাকায় তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়ে এবং জনতার আক্রমণে তারা নিহত হয়। এ-সময় হানাদারদের গুলিতে মশানের ডা. আব্দুর রশিদ হিলম্যান, গোলাপ শেখ, মো. আশরাফ আলী এবং সোনাউল্লাহ শহীদ হন।
১৬ই এপ্রিল পাকবাহিনী পুনরায় কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে শুরু করে। তারা ঢাকা থেকে নগরবাড়ী ঘাট হয়ে পাকশি ব্রিজ পার হয়ে ভেড়ামারা, মিরপুর, পোড়াদহ ও কুষ্টিয়া সুগারমিলস এই ৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে ব্যাপকহারে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে। এরপর পাকবাহিনী মিরপুর সদর, হালসা, পোড়াদহ এবং আমলায় ক্যাম্প স্থাপন করে। পাকবাহিনীর ২৫০ জনের একটি দল ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিরপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে (তৎকালীন কাউন্সিল ভবন) অবস্থান নেয় এবং আমলা সরকারি ডিগ্রি কলেজে একটি বড় ক্যাম্প স্থাপন করে। এ-সময় নারী-পুরুষ ও শিশুসহ হাজার- হাজার মানুষ প্রাণভয়ে বর্ডার পার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে শুরু করে।
পাকবাহিনীর প্রবেশের পরপরই মিরপুরে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি কমিটি গঠন করে। মিরপুর উপজেলায় শান্তি কমিটির সভাপতি ছিল মুসলিম লীগ নেতা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী (পিতা মো. আতাহার আলী, ধুবইল, মিরপুর সদর)। খন্দকার কোরবান আলী ও তার ছেলে সিদ্দিক ছিল মিরপুরের দুর্ধর্ষ রাজাকার। মসফের আলী (গোবিন্দওনিয়া), আবুল হাশেম (চিথলিয়া), আশরাফুল মৃধা (তালবাড়ীয়া), মহি মণ্ডল (রানাখড়িয়া), আকবর আলী (কামারপাড়া), আব্দুল লতিফ শেখ (বালিকাপাড়া), আজগর আলী ওরফে কোকো (আমলা), আব্দুল জলিল (কাটদহ, পোড়াদহ), মোজাহার খাঁ (আহাম্মদপুর, পোড়াদহ)-সহ মিরপুর উপজেলায় ১৩০ জনের অধিক রাজাকার পাকবাহিনীর সহযোগী হিসেবে নারীনির্যাতন, সম্পদ লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয়। পাকবাহিনী তাদের স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় ময়না খাতুন (বীজনগর) ও মনোয়ারা খাতুন (কেউপুর, বারুইপাড়া)-এর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। জুন মাসে রাজাকার মো সিদ্দিক (মিরপুর সদর) মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন (হালসা, মিরপুর)-এর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। ২৫শে নভেম্বর পাকবাহিনী পিয়ারপুর ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে।
পাকবাহিনী আমলা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও পোড়াদহ হাইস্কুলে লোকজন ধরে এনে নির্যাতন করত। এছাড়া আমলায় অবস্থিত ভগবানচন্দ্র শাহের জমিদার বাড়িতে স্বাধীনতাকামী মানুষকে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন চালাত।
মিরপুর উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকটি সম্মুখ যুদ্ধ হয়। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— শেরপুর যুদ্ধ, কামারপাড়া যুদ্ধ, কাকিলাদহ যুদ্ধ, হাসলা যুদ্ধ ও শুকচা যুদ্ধ। ২৬শে নভেম্বর শেরপুরের মঙ্গলপুর মাঠে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। ভোর ৫টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। যুদ্ধের এক পর্যায়ে পাকবাহিনী পিছু হটতে থাকে এবং বিকেল ৩টায় তারা আত্মসমর্পণ করে। এ-যুদ্ধে ৭০ জনের মতো পাকসেনা নিহত হয়। শেরপুরের যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, বীর প্রতীকসহ ৮ জন মানুষ শহীদ হন। এটি শেরপুর যুদ্ধ- নামে পরিচিত। ৩১শে মার্চ সকাল ১০টায় কামারপাড়ায় ৩ জন পাকহানাদারের সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে মিরপুর থানার সিপাহি মহিউদ্দিন ও গোরদহ গ্রামের মনিরউদ্দিন (পিতা মোজাহার প্রামাণিক) শহীদ হন। পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য নিহত হয় এবং ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এটি কামারপাড়া যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। ২৮শে নভেম্বর কাকিলাদহে উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এ- যুদ্ধে ৩০ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। অপরদিকে মধু মণ্ডল ও সাদেক আলীসহ ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এটি কাকিলাদহ যুদ্ধ বলে পরিচিত। ১৩ই আগস্ট শুকচার জি কে ক্যানেলে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধ হয়। আলমতারা থানার গোবিন্দপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জামসেদ নূরী টগর (২ছাত্র ইউনিয়ন-এর সদস্য, চুয়াডাঙ্গা কলেজের ছাত্র) এ-যুদ্ধে শহীদ হন। এটি শুকচা যুদ্ধ – নামে পরিচিত। ১২ই সেপ্টেম্বর হালসা রেলগেটে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর যুদ্ধ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন কমান্ডার শফিউল ইসলাম মজনু ও কমান্ডার মারফত আলী। এ-যুদ্ধে পাকসেনারা পিছু হটে পালিয়ে যায়। এটি হালসা যুদ্ধ- হিসেবে পরিচিত। ৮ই ডিসেম্বর মিরপুর উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
উপজেলার খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মো. খালেদ সাইফুদ্দিন, বীর বিক্রম (পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ, পোড়াদহ, কাটদহ) ও শামসুদ্দীন আহমেদ, বীর প্রতীক (পিতা হাউস সরকার, মহীষখোলা)।
মিরপুর উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- শহীদ মো. খালেদ সাইফুদ্দিন, বীর বিক্রম (৫ই আগস্ট রতনপুর সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ), শহীদ শামসুদ্দীন আহমেদ, বীর প্রতীক (৭ই ডিসেম্বর শহীদ), মো. খালেদ সাইফুদ্দিন তারেক, বীর বিক্রম (পিতা মহিউদ্দিন আহমেদ, কাটদহ, পোড়াদহ; তাঁকে চুয়াডাঙ্গার নাটুদহে সমাধিস্থ করা হয়), মহিউদ্দিন সিপাহী (নড়াইল), আশরাফ আলী খান (পিতা হাচেন আলী খান, মশান, বারুইপাড়া), গোলাপ শেখ (পিতা নজর আলী শেখ, মশান, বারুইপাড়া), মধু মণ্ডল (পিতা তালেব মণ্ডল, মোচাইনগর, আমলা), ওমর আলী (পিতা ফাকু মণ্ডল, কালিনাথপুর, ছাতিয়ান), ছাদেক আলী (পিতা ভোলাই মালিথা, আমলা), আমিরুল ইসলাম (পিতা তবিবর রহমান, কবরবাড়ীয়া, বারুইপাড়া), আ. রহিম উদ্দিন (পিতা ময়জ উদ্দিন শেখ, কাটদহ, পোড়াদহ), সোনাউল্লাহ মণ্ডল (পিতা ঔরায়েশ আলী মণ্ডল, কবরবাড়ীয়া, বারুইপাড়া), জসিম উদ্দিন (পিতা আছির উদ্দিন, কাজিপুর, ধুবইল), আ. রশীদ (পিতা আব্দুর রহমান খন্দকার, মশান, বারুইপাড়া), আকুল শেখ (পিতা কচিমদ্দিন শেখ, মোচাইনগর, আমলা), জহুরুল হক (পিতা ইজ্জত আলী, মাঝিহাট, কুরশা), আব্দুল বারী (পিতা নুরুল হক মল্লিক, মাহেরনগর, বহলবাড়ীয়া), রিয়াজতুল্লাহ (পিতা মোতালেব হোসেন, কচুবাড়ীয়া, খয়েরপুর, আমলা), কাজী দেলোয়ার হোসেন (পিতা আজিজুর রহমান, মিরপুর সদর), দাউদ হোসেন (পিতা ইয়াদ আলী, কচুবাড়ীয়া, খয়েরপুর, আমলা), নাজির আহমেদ (ইপিআর সদস্য, পিতা মীর চাঁদ আলী, নওদাপাড়া, আজমপুর, আমলা), ইমদাদুল হক (পুলিশ সদস্য, পিতা নুরুল হক, আটিগ্রাম, ছাতিয়ান), সুবেদার নাজির আহমেদ (ইপিআর সদস্য, পিতা গোলাম হোসেন, ঝুটিয়াডাঙ্গা, আবুরী, আমলা সদরপুর), রওশন আলী (ইপিআর সদস্য, পিতা আলাদত হোসেন, ঝুটিয়াডাঙ্গা, মালিহাদ) ও নাজির আলী (ইপিআর সদস্য, পিতা রহমান আলী, বরবড়িয়া, সদরপুর)।
এখানকার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হলেন- মো. জহুরুল হক মণ্ডল (পিতা রাহাতুল্লাহ মণ্ডল, কেউপুর, বারুইপাড়া) এবং শফিউল ইসলাম মজনু (পিতা লুৎফর রহমান, আমবাড়িয়া)। মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে মিরপুর উপজেলা চত্বরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ এবং শহীদ সিপাহি মহিউদ্দিনের সমাধিস্থলে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। শহীদ জামসেদ নূরী টগরের স্মরণে শুকচাতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে। এছাড়া শহীদদের স্মরণে কয়েকটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। সেগুলো হলো- শহীদ হাবিবুর রহমান সড়ক, শহীদ দুলাল কাজী সড়ক, শহীদ শামসুদ্দিন সড়ক, শহীদ আব্দুল বারী সড়ক, শহীদ জহুরুল ইসলাম সড়ক ও শহীদ মহিউদ্দিন সড়ক। [মোসা. নাজমা আক্তার ও মো. মাহবুবুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড