You dont have javascript enabled! Please enable it!

মিরপুর যুদ্ধ (শিবালয়, মানিকগঞ্জ)

মিরপুর যুদ্ধ (শিবালয়, মানিকগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১০ই ডিসেম্বর। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মনসুর আলম খান কপালে বুলেটবিদ্ধ হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন।
শিবালয় থানা থেকে প্রায় ৫ কিমি উত্তরে মিরপুর গ্রামের অবস্থান। নভেম্বর পর্যন্ত শিবালয় থানার উত্তর ও উত্তর- পশ্চিমাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো ক্যাম্প গড়ে না ওঠায় এ অঞ্চলে রাজাকারআলবদরদের অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা অধিক হয়। প্রায় প্রতিদিনই হত্যা, লুণ্ঠন ও নারীনির্যাতনের মতো কর্মকাণ্ড চলত। তাদের অত্যাচার থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মিরপুর গ্রামের মো. মোসলেম উদ্দিন মোল্লার বাড়িতে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেন। সেখান থেকে রাজাকার ও এদেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়। কিন্তু রাজাকাররা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ধ্বংস করার জন্য নিকটস্থ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ১০ই ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে তারা হানাদারদের সহযোগিতা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প আক্রমণ করে। আক্রমণের শুরুতেই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মনসুর আলম খান কপালে বুলেটবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এছাড়া আরো বেশ কয়েকজন মারাত্মকভাবে আহত হন। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভেঙ্গে পড়ে। অতর্কিত এ আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে বাধ্য হন। এরপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহায়তায় রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় তারা মিরপুর গ্রামে ব্যাপক লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন ও গণহত্যা চালায়। প্রতিবছর ১০ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা এখানে স্মরণসভার আয়োজন করেন। [জগন্নাথ বড়ুয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!