You dont have javascript enabled! Please enable it!

মিরসরাই থানা অপারেশন (মিরসরাই, চট্টগ্রাম)

মিরসরাই থানা অপারেশন (মিরসরাই, চট্টগ্রাম) ১৩ই ডিসেম্বর সংঘটিত হয়। এ অপারেশনের মাধ্যমে মিরসরাই উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়।
চট্টগ্রামের সড়ক ও রেলপথের প্রবেশমুখ হলো মিরসরাই। ৬ই ডিসেম্বর ফেনী হানাদারমুক্ত হয়। পাকিস্তানি হানাদাররা চট্টগ্রামের দিকে সরে যেতে শুরু করে। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে মিরসরাইতে অবস্থানরত গেরিলা গ্রুপগুলো ধীরে-ধীরে মহাসড়কের দিকে এসে অবস্থান গ্রহণ করতে থাকে। বিএলএফ ও এফএফ-এর বিভিন্ন গ্রুপের সম্মিলিত আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানি বাহিনী। একই সময়ে উত্তরদিক থেকে অগ্রসরমাণ বাংলাদেশ-ভারত যৌথবাহিনী। সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে ডিসেম্বর মাসের প্রথমদিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ক্রমে উত্তর সীমান্ত থেকে শহরের দিকে পিছু হটতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে মিরসরাই থানা ভবনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও নিকটস্থ স্থানে তাদের দোসর রাজাকার বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে অবস্থান করত। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ১৩ই ডিসেম্বর কমান্ডার নিজামউদ্দিন চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে মিরসরাই থানা অপারেশন করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণে পাকিস্তানি হানাদার ও রাজাকাররা থানা থেকে চট্টগ্রম শহর অভিমুখে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় হানাদাররা সকালে মিরসরাইয়ের উত্তরে ওয়ারলেস ভবন ডিনামাইড দিয়ে উড়িয়ে দেয়। উপর্যুপরি আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা মিরসরাই থানা দখল করেন। বিজয়ের উল্লাসে চতুর্দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা এসে মিলিত হতে থাকেন। থানা ভবনে বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়। থানা অপারেশনে নেতৃত্ব দেন এফএফ কমান্ডার নিজামউদ্দিন চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন ডেপুটি কমান্ডার নির্মল চন্দ্র দেবনাথ ও কামালউদ্দিন গেদুসহ খান সাহেব, শফিকুল আলম, জয়নাল আবেদীন, শাহজাহান, আমির হোসেন, শঙ্কু একরাম, শফিকুল ইসলাম, সফিউদ্দিন, ফয়েজ আহমদ, শাহজাহান-২, নাসিরউদ্দিন, নুরুল ইসলাম, সুলতান, মো. মহিউদ্দিন, জাফরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা। এ অপারেশনের মাধ্যমে ১৩ই ডিসেম্বর মিরসরাই উপজেলা হানাদারমুক্ত হয়। [জগন্নাথ বড়ুয়া]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!