You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুক্তিযুদ্ধে মিটামইন উপজেলা (কিশোরগঞ্জ)

মিটামইন উপজেলা (কিশোরগঞ্জ) কিশোরগঞ্জ জেলার দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে ভাটি অঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য স্থান। এটি কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত। ১৯৭১ সালে এটি পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। ১৯৮১ সালে মিটামইন পূর্ণাঙ্গ থানায় এবং ১৯৮৪ সালে উপজেলায় উন্নীত হয়। ১৯৭১ সালে সদর-সহ মিটামইনের ৩টি ইউনিয়ন ইটনা থানার অন্তর্ভুক্ত ছিল। মিটামইন উপজেলার মুক্তিযুদ্ধকালীন সকল কর্মকাণ্ড ইটনা এবং নিকলী উপজেলার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল।
মিটামইন উপজেলায় রাজনৈতিক সচেতনতার প্রাণপুরুষ ছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ১৯৬০-এর দশকে ভাটি এলাকার রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর আবির্ভাব ঘটে। প্রথমে তিনি ছাত্রনেতা এবং পরে জননন্দিত আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে এ এলাকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর অনুসারী ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মীরা ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষকে ঐকবদ্ধ করেন।
১৯৬৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিটামইনের মানুষ আইয়ুব খানের প্রতিদ্বন্দ্বী মিস ফাতিমা জিন্নাহর পক্ষে ব্যাপক প্রচারণা চালায়। ১৯৬৬ সালে আওয়ামী লীগ ৬-দফা দাবি পেশ করার পর মিটামইনে এর পক্ষে জনমত তৈরি হয়। ৬- দফা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মতো মিটামইন এলাকায়ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। মিটামইনের মানুষ আগরতলা মামলা-বিরোধী ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১৯৭০-এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে তরুণ নেতা আবদুল হামিদ ইটনা-অষ্টগ্রাম-নিকলী ও তাড়াইল এ চার থানা নিয়ে গঠিত আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন লাভ করেন। নভেম্বর মাসের শেষদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচনী প্রচারণায় মিটামইন এলাকায় গেলে সাধারণ মানুষ তাঁকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানায়। এখান থেকে আবদুল হামিদ এমএনএ নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো এ অঞ্চলের মানুষও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা ২রা মার্চ থেকে ২৫শে মার্চ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সর্বাত্মক অসহযোগ পালন করে। বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ-এ পূর্ণ দিকনির্দেশনা লাভ করে। এরপর ২৫শে মার্চের গণহত্যার খবর শোনার সঙ্গে-সঙ্গে মিটামইনের সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
মিটামইন উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি মূলত কিশোরগঞ্জ সদর থেকে শুরু হয়। ২৫শে মার্চের পর ছাত্রনেতারা নিজ- নিজ এলাকায় এসে জনগণকে সংগঠিত করতে থাকেন। বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের পর যুদ্ধের জন্য তারা প্রস্তুত হন। আবদুল হামিদ এমএনএ-এর উদ্যোগে সংগ্রাম কমিটি গঠিত হয়। পরে হানাদার প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়। স্কুলের মাঠ ও বিভিন্ন গ্রামের খোলা ময়দানে যুবকরা ইপিআর এবং আনসারদের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে। হানাদার বাহিনীর উন্নত সমরাস্ত্র মোকাবেলায় তারা সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের লক্ষ্যে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ভারত সীমান্ত খুলে দিলে ছাত্র-যুবকরা ভারতে যায়। মিটামইন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মেঘালয় রাজ্যে যান। ইকো-ওয়ান, তুরা, তেজপুর, জাফলং এবং আগরতলার হেজামারায় তাঁদের অনেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
মিটামইন এলাকার মুক্তিযুদ্ধের মূল সংগঠক ছিলেন আবদুল হামিদ এমএনএ। তাঁর প্রতি মিটামইনবাসীর ব্যাপক সমর্থন ছিল। কমিউনিস্ট নেতা অধ্যাপক আইয়ুব রেজা চৌধুরীও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। আবদুল হামিদের অনুগত কলেজ এবং স্কুলের ছাত্ররা এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে নিজেদের নিয়োজিত করে। তাদের মধ্যে কামরুল আহসান শাহজাহান, জিল্লুর রহমান (বর্তমানে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক), সাগীর আহমেদ, নূরুল ইসলাম সিদ্দিকী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া আ. সহিদ ভূঞা, মো. আ. গণি, আ. বারী মুন্সী, আ. মজিদ ভূঞা, আবদুল হক, বোরহান উদ্দিন চৌধুরী বুলবুল, আব্দুল হামিদ (ঢাকী) প্রমুখ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। যুদ্ধ শুরু হলে যাঁদের নেতৃত্বে অনেক যুবক প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান, তাঁদের মধ্যে কামরুল আহসান শাহজাহান, নূরুল ইসলাম সিদ্দিকী, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর আলম ভূঞা, মুজিবুর রহমান ভূঞা, রফিকুর রহমান ভূঞা, সাদেকুর রহমান, গাজীউর রহমান ভূঞা, আ. রউফ ভূঞা, আবুল কালাম, কে এম আফতাব উদ্দিন খান, রইছ উদ্দিন ভূঞা প্রমুখের নাম অগ্রগণ্য। মিটামইনে নির্ধারিত কোনো থানা কমান্ডার ছিলেন না, তবে মুক্তিবাহিনীর সদস্য সাগীর আহমেদ কখনো-কখনো কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কাটখাল ইউনিয়নের দিল্লির আখড়ার মোহন্ত বনবাসী দাস তার বিশাল হিজলবনে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়দান ও নানাভাবে সাহায্য করেন। সুরমা নদীর তীরে এ হিজলবনে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর নৌযান ধ্বংস করতে এম্বুশ করতেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বনবাসী দাস আখড়া থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার সরবরাহ করতেন।
মিটামইন উপজেলায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অনুপ্রবেশের আগে মুক্তিযোদ্ধারা প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান। ফলে পাকবাহিনী কোনো প্রতিরোধ মোকাবেলা না করেই মিটামইনে প্রবেশ করে।
২৬শে আগস্ট নিকলী ক্যাম্প থেকে এসে একদল পাকিস্তানি সেনা মিটামইনে হামলা চালায়। মিটামইনে পাকবাহিনী বা রাজাকারদের কোনো স্থায়ী ক্যাম্প ছিল না। ইটনা, অষ্টগ্রাম ও নিকলী থেকে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা এখানে এসে গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করত।
মিটামইনের রাজাকারদের মধ্যে ইদ্রিস মৌলানা (উরিয়ন্দ; এ কুখ্যাত দালাল মিটামইনে পাকবাহিনীর পথ প্রদর্শক ছিল; তার সহযোগিতায় ২৬শে আগস্ট মিটামইন সদর ও এর পাশের কয়েকটি গ্রামে গণহত্যা, লুণ্ঠন এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে), আ. মান্নান ভূঞা (কান্দি, ইউনিয়ন কেওয়ারজোড়; ধোবাজুরা গ্রামের হত্যাকাণ্ড এবং ঢালা-ছত্রিশ গণহত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ অনেক অপকর্মের মূল হোতা), আবু তাহের ইউসুফী (কেওয়ারজোড় ইউনিয়ন; সে ছিল দালাল আ. মান্নান ভূঞার ভগ্নিপতি এবং ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত রাজাকার কমান্ডার; আ. মান্নান ভূঞার সকল অপকর্মের সে প্রধান সহযোগী ছিল), মো. খুরশিদ (বাহেরচর, প্রভাবশালী দালাল; ইটনার বিশিষ্ট রাজাকার আব্দুর রহিমের ঘনিষ্ঠ এ কুখ্যাত দালাল গণহত্যা, অগ্নিসংযোগসহ নানা অপকর্মের হোতা), কোরবান আলী (কেওয়ারজোড়), আ. মালেক (বৈরাটি, মুসলিম লীগের নেতা), আনোয়ারুল ইসলাম ফুল মিয়া (চারিগ্রাম, পিডিবি-র নেতা), ডা. মতি মিয়া (কেওয়ারজোড় ইউনিয়ন, দালাল আবু তাহেরের ভাই, রাজাকার কমান্ডার) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। এরা গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, নারীনির্যাতন প্রভৃতি অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল।
২৩শে এপ্রিল মিটামইনের চারিগ্রামের মাঠে মুক্তিযোদ্ধারা যখন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলেন, তখন পাকিস্তানি বিমান বাহিনী তাঁদের ওপর অবিরাম গুলি বর্ষণ করতে থাকে। ফলে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গ্রামের অনেক নারী, পুরুষ, শিশু, কিশোর আহত হয়।
২৬শে আগস্ট নিকলী ক্যাম্প থেকে এসে একদল পাকসেনা মিটামইনে আক্রমণ করে। মিটামইনের পার্শ্ববর্তী উড়িয়ন্দ গ্রামের দালাল ইদ্রিস মৌলানা (ইদু মোল্লা) তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে আসে। পাকসেনারা গানবোট ও লঞ্চে মিটামইন বাজারে আসে। মুহূর্তের মধ্যে তারা মিটামইন এবং এর নিকটবর্তী কয়েকটি গ্রাম অবরোধ করে হত্যাকাণ্ড চালায়। তারা মিটামইন বাজার পুড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে কালীপুর, খুলিয়াপাড়া, গিরিশপুর, বড়হাটি, সরকারহাটি, ইসলামপুর প্রভৃতি গ্রামে হামলা চালিয়ে ৪০ জন নারী- পুরুষকে হত্যা করে। এ ঘটনা ছাব্বিশে আগস্টের গণহত্যা নামে পরিচিত। সেদিন পাকসেনারা অনেকের বাড়িঘরে আগুন দেয়। হানাদাররা আবদুল হামিদ এমএনএ- এর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। কয়েক ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে মিটামইনকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে পাকবাহিনী সেদিন নিকলী ক্যাম্পে ফিরে যায়।
১লা সেপ্টেম্বর আব্দুল মান্নান ভূঞা, মৌলানা আবু তাহের, ইটনা থানার রায়টুটি গ্রামের দালাল আশরাফ উদ্দিন খান মানিক মিল্কীসহ আরো কিছু স্বাধীনতাবিরোধী ব্যক্তি ইটনা ক্যাম্প থেকে পাকিস্তানি হানাদারদের নিয়ে ঘাগড়া ইউনিয়নের ধোবাজোড়া গ্রামে আক্রমণ চালায়। গ্রাম থেকে তারা অনেককে ধরে নিয়ে যায়। অনেককে হত্যা করে। ধোবাজোড়া গণহত্যায় নিহতদের অনেকের পরিচয় পরে জানা গেছে।
১৫ই সেপ্টেম্বর দালাল আব্দুল মান্নান ভূঞা এবং আবু তাহের ইউসুফির নেতৃত্বে রাজাকার এবং লুটেরা বাহিনী কাটখাল ইউনিয়নের হিন্দু জনপদ ঢালা-ছত্রিশ আক্রমণ করে। সেখান থেকে কয়েকশ নারী-পুরুষকে ধরে ইটনা নিয়ে যাওয়া হয়। রাজাকার আব্দুল মান্নান ভূঞা এবং আবু তাহেরের আত্মীয়- স্বজনরা গ্রামটি সম্পূর্ণভাবে লুট করে। মানুষের ধান-চাল ও গরু-মহিষ সব নিয়ে যায়। রাজাকার বাহিনী ধৃত সকলকে বয়রার বটমূলে নিয়ে আসে। সেখানে ২০-২৫ জন নারীকে ইটনায় হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেয়। বাকিদের চোখ বেঁধে বেয়নেটের আঘাতে হত্যা করে বয়রার বটমূলে গণকবর দেয়। ঢালা-ছত্রিশ গণহত্যার পর সমস্ত গ্রাম জনশূন্য হয়ে পড়ে। ঢালা-ছত্রিশের হতভাগ্য নারীরা ইটনার সেনা ক্যাম্পে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। তাদের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
মিটামইন উপজেলা সদরের নিকটবর্তী হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম বোরনপুর। এ গ্রামের বৈষ্ণবরা প্রায় সবাই ছিল অবস্থাসম্পন্ন। পাশের গ্রামের কিছু সুযোগ সন্ধানী লোক হঠাৎ একদিন গ্রামটিতে লুটপাট চালায়। হানাদার বাহিনী কর্তৃক আরো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় অসহায় বৈষ্ণবরা লুটেরাদের বাধা দেয়নি। কিছুদিন পর ঢালা-ছত্রিশের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে প্রাণের ভয়ে ৬০০-৭০০ নারী-পুরুষ নৌকাযোগে মেঘালয় সীমান্তের দিকে যাত্রা করে। গভীর রাতে যখন তারা ইটনার হাওর পাড়ি দিচ্ছিল, তখন পাকিস্তানি হানাদারদের টহল বাহিনীর হাতে তারা ধরা পড়ে। অস্ত্রের মুখে হানাদাররা নৌকাগুলো থেকে বিভিন্ন বয়সের দুশতাধিক মানুষকে ইটনার সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ঢালা- ছত্রিশের মানুষের মতোই করুণ পরিণতির শিকার হয় বোরনপুরের মানুষ। এটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বোরনপুর গণহত্যা বলে পরিচিত। ঢালা-ছত্রিশের মতো এখানেও নারীদের রেখে বাকিদের বয়রার বটগাছের নিচে হত্যা করা হয়। এখান থেকে আটক নারীদের পাঠানো হয় কিশোরগঞ্জ, নিকলী এবং নান্দাইলস্থ হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে।
ভাটি এলাকা মিটামইনে পাকবাহিনী বা রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো যুদ্ধ হয়নি। কাটখাল ইউনিয়নে সুরমা নদীর তীরে হিজলবনে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি আখড়া ছিল। এ আখড়া ‘দিল্লির আখড়া’ নামে পরিচিত ছিল। এখানে মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর নৌযান ধ্বংস করতে এম্বুশ করতেন। মিটামইনে কোনো যুদ্ধ না হলেও এ থানার মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এখানকার দুজন মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হন।
মিটামইন এলাকা যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের সময় ইটনা উপজেলা এবং নিকলী উপজেলা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতো, সেহেতু ঐ দুটি থানা হানাদারমুক্ত হওয়ার দিনই (১৫ই নভেম্বর) মিটামইন হানাদারমুক্ত হয়।
মিটামইনের শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হলেন- মো. সিরাজুল হক (পিতা মো. বারু মিয়া, শান্তিপুর) এবং মো. মফিজ উদ্দিন (পিতা হাজী মো. সালামত মুন্সি, বড়কান্দা)। এঁরা সাচনার যুদ্ধে শহীদ হন।
মিটামইনে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হকের নামে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চারিগ্রামে পাক বিমান বাহিনীর হামলায় আহত কিশোরী মিনা বেগমের গায়ে অপারেশন করে ১৯৯৮ সালে একটি বুলেট বের করা হয়। এ বুলেটটি ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রাখা হয়েছে। [শেখ অলিনেওয়াজ অলিউল্লাহ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!