You dont have javascript enabled! Please enable it!

মাসদাইর গণহত্যা (নারায়ণগঞ্জ সদর)

মাসদাইর গণহত্যা (নারায়ণগঞ্জ সদর) সংঘটিত হয় ২৭শে মার্চ শনিবার। এদিন নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার মাসদাইর গ্রামের কবরস্থানের সামনে বেলা ১টার পর জামিল ডক ইয়ার্ডের মালিক জসিমুল হকের বাড়িতে পাকবাহিনী গণহত্যা চালায়। ১০-১২ জন মানুষ এ গণহত্যার শিকার হন।
মাসদাইর প্রতিরোধযুদ্ধের এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি ফুরিয়ে গেলে আত্মরক্ষার্থে তাঁরা জামিল ডক ইয়ার্ডের মালিক জসিমুল হকের বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির পেছনে ধানক্ষেতের ভেতর দিয়ে নিরাপদ স্থানে সরে যান। এটি পাকিস্তানি সেনাদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা ট্যাঙ্কের গোলা ছুড়তে-ছুড়তে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। নিরাপত্তার কথা ভেবে জসিমুল হকের বাড়িতে মাসদাইরের ৬টি পরিবারের সদস্যরা আশ্রয় নেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তানি সেনারা গুলিবর্ষণ করতে-করতে জসিমুল হকের বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা দরজার সামনে রাইফেল ও এলএমজি তাক করে গালি দিয়ে সবাইকে ঘরের বাইরে আসতে বলে। সবাই ঘরের বাইরে এলে পাকিস্তানি সেনারা বাড়ির উঠানে সবাইকে দাঁড় করায়। এরপর নারী ও শিশুদের থেকে পুরুষদের আলাদা করে ১০-১২ জন পুরুষকে এক জায়গায় জড়ো করে বাড়ির মূল ফটকের বাইরে নিয়ে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। মাসদাইর গণহত্যায় নিহত যাদের নাম জানা যায়, তারা হলেন- জামিল ডক ইয়ার্ডের মালিক জসিমুল হক, বাবুর্চি রসুল, কেবিন বয় আমিন রসুল (১৯), পাশের বাড়ির আলী আক্তার (অবাঙালি) ও তার ভাই আলী আহাম্মদ, আলী আক্তারের কাজের ছেলে, গ্রিন্ডলেস ব্যাংকের আব্দুস সাত্তার, তৌফিক ছাত্তার, জালাল প্রমুখ। এছাড়া পাকিস্তানি সেনারা জসিমুল হকের স্ত্রী লায়লা হাসান বানু ডলির স্বর্ণালঙ্কার লুট করার পর তাঁকে বেয়নেট চার্জ ও গুলি করে। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান। [রীতা ভৌমিক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!