বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ মাস্টার খান গুল
মাস্টার খান গুল পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ। তিনি পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বে খাকসার আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এবং পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি ১৯৪৫ সালে শিক্ষকতা পেশায় ইস্তফা দিয়ে পেশোয়ারের কাবুলি বাজারে মঞ্জুর-ই-আম কুতুবখানা প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পেশোয়ার থেকে উর্দুতে একটি দৈনিক সংবাদপত্র বঙ্গে হারাম প্রকাশনার কাজ শুরু করেন এবং মহল্লা জাঙ্গীতে শাহীন প্রিন্টিং প্রেস নামে একটি ছাপাখানা স্থাপন করেন। তিনি ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর বিশ্বস্ত সহকর্মী মাস্টার খান গুল নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের প্রথম দলীয় মুখপত্র বঙ্গে হারাম পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন। বাংলাদেশে গণহত্যা শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে তিনি আত্মগোপনে থেকে বাংলাদেশে গণহত্যা বন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে জনমত গঠনে নিরলস কাজ করেন। পশ্চিম পাকিস্তানে আটকে পড়া বহু বাঙালিকে তিনি গোপনে সীমান্ত অতিক্রম করে আফগানিস্তান হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেন। পাকিস্তানি হয়েও তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা প্রার্থনার তিনি দৃঢ় সমর্থক ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২০১৩ সালের ১লা অক্টোবর মাস্টার খান গুল-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৮ম খণ্ড