মাঝিপাড়া যুদ্ধ (শাজাহানপুর, বগুড়া)
মাঝিপাড়া যুদ্ধ (শাজাহানপুর, বগুড়া) সংঘটিত হয় পরপর দুদিন – ২রা ও ৩রা ডিসেম্বর। এতে বেশ কয়েকজন পাকসেনা নিহত হয় এবং বাকিরা পালিয়ে যায়। অপরদিকে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
বগুড়া শহর থেকে ৮-৯ কিলোমিটার দক্ষিণে মাঝিপাড়া অবস্থিত। মাঝিপাড়ার পশ্চিমে ডোমন পুকুর, দক্ষিণে সেনানিবাস ও পূর্বে দুবলাগাড়ি। মাঝিপাড়ার ওপর দিয়ে চলে যাওয়া ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কটি পাকসেনাদের যাতায়াতের প্রধান রাস্তা ছিল। এ রাস্তা দিয়ে তারা বিভিন্ন রকমের রসদ সরবরাহ করত। মুক্তিযোদ্ধারা বিষয়টির ওপর নজর দেন এবং পাকসেনাদের যাতায়াতকে বাধাগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করেন। দুবলাগাড়ি হাটের উত্তরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাকসেনাদের ওপর আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। এ দলের নেতৃত্ব দেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. জহুরুল ইসলাম। ২রা ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাদের একটি টহল দল মাঝিপাড়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এ খবর পেয়ে কমান্ডার জহুরুল ইসলাম ১০-১২ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে মহাসড়কের পূর্ব পাশে মাঝিপাড়া বাজারের ৮০০ গজ উত্তরে অবস্থান নেন। পাকসেনারা ২০০ গজের মধ্যে এসে পড়লে মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ শুরু করেন এবং উভয় পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের এক পর্যায়ে ৯ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত এবং বাকিরা পশ্চিম দিকে পালিয়ে যায়। পরের দিন ৩রা ডিসেম্বর পাকসেনাদের একটি গাড়ি বগুড়া থেকে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। এ খবর জানতে পেরে মো. জহুরুল ইসলাম, এ এফ এম ফজল ও নজীবর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মাঝিপাড়া মহাসড়কের ৩টি স্থানে এম্বুশ করেন। পাকসেনারা এম্বুশ এলাকায় প্রবেশ করা মাত্র মুক্তিযোদ্ধারা গুলিবর্ষণ করলে যুদ্ধ শুরু হয়। এ-যুদ্ধে বেশ কিছু সংখ্যক পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়। ধীরেন নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। [সাহিদুর রহমান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড