You dont have javascript enabled! Please enable it! মাইজদী জেনারেল হাসপাতাল বধ্যভূমি (নোয়াখালী সদর) - সংগ্রামের নোটবুক

মাইজদী জেনারেল হাসপাতাল বধ্যভূমি (নোয়াখালী সদর)

মাইজদী জেনারেল হাসপাতাল বধ্যভূমি (নোয়াখালী সদর) নোয়াখালী সদর উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ অসংখ্য লোককে হত্যা করা হয়।
মাইজদী জেনারেল হাসপাতালটি নোয়াখালী জেলা শহরের কেন্দ্রস্থলে নোয়াখালী পৌরসভাধীন ১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে এ হাসপাতালটি ছিল নির্মাণাধীন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৪শে মার্চ মাইজদীতে প্রবেশের পর এ হাসপাতালে তাদের অন্যতম ঘাঁটি স্থাপন করে।
হাসপাতালের উত্তর দিকে রয়েছে একটি বিরাট দিঘি। দিঘির উত্তর ও পশ্চিম পাড়ে ছিল নির্মাণাধীন স্টাফ কোয়ার্টার্স। এর পূর্বপাড় ছিল ফাঁকা। দিঘির পূর্বপাড়কেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বধ্যভূমি হিসেবে ব্যবহার করে। ২৪শে মার্চ থেকে ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি বাহিনী এখানে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। এ ঘটনার একজন প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী এ এলাকার অধিবাসী দেলোয়ার হোসেন মিন্টু। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন কিশোর। মাইজদী হাসপাতাল তার বসতবাড়ির সন্নিকটে। তখন তার বাড়ি থেকে দিঘির পূর্বপাড় পর্যন্ত ছিল বিল। বাড়ির আঙ্গিনা থেকে তিনি দেখেছেন হানাদার বাহিনী কয়েকটি জিপে করে হাত-পা বাঁধা ৫০ জনের মতো মানুষ ধরে এনে তাদের দিয়ে গর্ত খোঁড়ায় এবং পরে তাদের হত্যা করে ঐ গর্তেই মাটিচাপা দেয়। এটি ছিল একদিনের ঘটনা।
বিশিষ্ট আইনজীবী ও বিভিন্ন সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক নরেন্দ্র কুমার শূরকে পাকবাহিনী মাইজদী গুপ্তাংক থেকে ধরে এনে অমানুষিক নির্যাতনের পর মাইজদী হাসপাতাল বধ্যভূমিতে হত্যা করে। ঘটনাক্রমে তাঁর ছেলে প্রণব কুমার শূর বেঁচে যান। এ অঞ্চলে নির্যাতন ও হত্যায় নেতৃত্ব দেয় পাকবাহিনীর মেজর ইমতিয়াজ। হত্যা-নির্যাতনে তাকে প্ররোচিত করে শান্তি কমিটির সদস্য খোকা মিয়া, খোন্দকার আতাউর রহমান ও মনির আহাম্মদ। ২১শে সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জ-রাজগঞ্জ যুদ্ধের দিন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে সবুজ, রবি, রফিকুর রহমান ও গোলাম হায়দারসহ ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়েন। পাকবাহিনী তাঁদের মাইজদী জেনারেল হাসপাতাল বধ্যভূমিতে হত্যা করে সেখানেই মাটিচাপা দেয়। [মো. ফখরুল ইসলাম]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড