মহাজনঘাটা সংলগ্ন বড়ুয়াপাড়া অপারেশন (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম)
মহাজনঘাটা সংলগ্ন বড়ুয়াপাড়া অপারেশন (চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম) পরিচালিত হয় সেপ্টেম্বর মাসে। চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলায় পরিচালিত এ অপারেশনে রাজাকারদের ১০টি রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়।
উপজেলা শান্তি কমিটির নেতা হাজি নুরুল ইসলাম (পিতা হাজি আবদুস সামাদ)-এর নেতৃত্বে হামিদুল কবির চৌধুরী ওরফে খোকা (পিতা ফউজুল কবির চৌধুরী, সওদাগর বাড়ি, হারলা), মাহফুজুল কবির চৌধুরী ওরফে কাঞ্চন (হারলা), আহমদ হোসেন ওরফে ছিয়া হোসেন (পিতা কালু মিয়া, চন্দনাইশ, হাজিপাড়া), আবদুল আজিজ চৌকিদার (হাজিপাড়া), শামসুল ইসলাম ওরফে বাঁকা শামসু (মধ্যম চন্দনাইশ), হাজি মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মুন্সিয়া (হাজিপাড়া), হাবিবুর রহমান (হাজিপাড়া), মনির আহমদ (হাজিপাড়া), সাবের আহমদ (হাজিপাড়া), নুরুল ইসলাম ওরফে বোম্বাইয়া হাজি (মধ্যম চন্দনাইশ), কাঞ্চন (হাজিপাড়া), মমতাজ (হাজিপাড়া), আবুল খায়ের চৌধুরী (মধ্যম চন্দনাইশ), নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু (চন্দনাইশ সদর), জাফর উল্লাহ (হাজিপাড়া), আইয়ুব আলী (পূর্ব জোয়ারা), আবু তাহের চৌধুরী ওরফে দুধু মিয়া (পূর্ব জোয়ারা), মোহাম্মদ জকরিয়া দুলু (পূর্ব জোয়ারা), আবদুশ শুক্কুর ওরফে শুক্কুইয্যা (চন্দনাইশ সদর), মোহাম্মদ সিদ্দিক (চন্দনাইশ সদর), অলিউজ্জামান (চন্দনাইশ সদর), নবী আহমদ (হাজিপাড়া), দানু মিয়া (হাজিপাড়া), নজরুল ইসলাম ওরফে নজু মিয়া প্রমুখ পাকিস্তানি দালাল ও রাজাকার সেপ্টেম্বর মাসে পশ্চিম হারলার হিন্দুবাড়িসমূহে গণহত্যা, লুটপাট, নারীনির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করতে যাচ্ছিল। এ খবর পেয়ে হাবিলদার আবু মোহাম্মদ ইসলাম গ্রুপ ও মীর আহমদ চৌধুরী গ্রুপ মহাজনঘাটা সংলগ্ন বড়ুয়াপাড়া রাস্তার মাথায় অবস্থান নেয়। আনোয়ারা উপজেলার একজন মুক্তিযোদ্ধা মাহাতা ইদ্রিসও এসে যোগ দেন। তখন দুপুর ১২টা। হাবিলদার আবু মোহাম্মদ ইসলামের নেতৃত্বে চাউম্মার দিঘির উত্তর-পূর্ব কোণে মীর আহমদ চৌধুরী গ্রুপ, পশ্চিম পাড়ের উত্তর কোণে আবু মোহাম্মদ ইসলাম গ্রুপ এবং বড়ুয়াপাড়ার ভেতরে মাহাতা ইদ্রিস এম্বুশ করেন। দুপুর ১টার দিকে দালাল ও রাজাকাররা গাড়িতে করে এখানে আসার সঙ্গে-সঙ্গে তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। তারাও পাল্টা আক্রমণ চালায়। ফলে উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। হানাদাররা এক পর্যায়ে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে। মুক্তিযোদ্ধারাও ভারী অস্ত্রে তার জবাব দেন। প্রায় দুঘণ্টা যুদ্ধ চলার পর গুলি, ফুরিয়ে যাওয়ায় হানাদাররা পালিয়ে যায়। পালানোর সময় তারা ১০টি থ্রি-নট- থ্রি রাইফেল ফেলে গেলে সেগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। এ অপারেশনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা হলেন: হাবিলদার আবু মোহাম্মদ ইসলাম (পিতা হামিদ হোসেন, কানাইমাদারি, বরকল), মীর আহমদ চৌধুরী (পিতা আবদুল মজিদ চৌধুরী, পূর্ব চন্দনাইশ), আবুল বশর (পিতা মাওলানা মো. ইছহাক, ভাইখলিফাপাড়া, উত্তর হাশিমপুর), আইয়ুব আলী (পিতা হামিদ হোসেন, কানাইমাদারি), নুরুল ইসলাম (পিতা হামিদ হোসেন, কানাইমাদারি), মো. আবুল কাশেম (পিতা মো. এনু মিঞা, পশ্চিম পাঠানদণ্ডি), আবুবকর চৌধুরী (পিতা কবির আহমদ চৌধুরী, কানাইমাদারি), মনছফ আলী (পিতা আবদুর রশিদ, কানাইমাদারি), আবদুল জব্বার (পিতা দুলা মিয়া চৌধুরী, কানাইমাদারি), এস এম গফুর (পিতা ছৈয়দুল হাকিম, কানাইমাদারি), মোহাম্মদ ইউছুপ ওরফে ইঞ্চিয়া (পিতা খুইল্যা মিয়া, পশ্চিম হারলা), আবুল কালাম আজাদ (পিতা আহমদ হোসেন, হারলা), আছহাব মিয়া (পিতা মতিউর রহমান, মধ্যম চন্দনাইশ), আবদুল আলিম (পিতা ওবাইদুর রহমান), ফোরক আহমদ (পিতা আবদুর রশিদ, দক্ষিণ জোয়ারা), শিব্বির আহমদ (পিতা সিরাজুল ইসলাম, অইল্যার বরবাড়ি, হারলা) প্রমুখ। [শামসুল আরেফীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড