বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবেক উপমন্ত্রী মনসুর আলী
মনসুর আলী (১৯২৪-১৯৮৭) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবেক উপমন্ত্রী। তিনি ১৯২৪ সালের ৬ই জুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম লাল মিয়া এবং মাতার নাম আফরোজা খাতুন। দরিদ্রতার কারণে নিয়মিত শিক্ষা অর্জন করতে না পারSavedর জীবনের অভিজ্ঞতার ঝুলি ছিল বিশাল এবং জীবনমুখী। তিনি ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন এবং ১৯৫০ সাল থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৫২ সালের নির্বাচনে তাঁরই প্রচেষ্টায় ত্রিপুরার ৩০টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনে কংগ্রেস জয়ী হয়। তিনি ত্রিপুরা আঞ্চলিক পরিষদ (১৯৫৭-আমৃত্যু), প্রদেশ কংগ্রেস নির্বাচন কমিটি (১৯৫৭-আমৃত্যু), সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটি (১৯৬৩-৭৪) এবং ত্রিপুরা বিধানসভার সদস্য (১৯৬৭-৭৭) ছিলেন। তাছাড়াও তিনি ত্রিপুরা জেলা কংগ্রেস কমিটি (১৯৫৮) ও প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য (১৯৬৩-আমৃত্যু) ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের (১৯৭৭) পর তিনি কংগ্রেস বিধান পরিষদীয় বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত এবং কংগ্রেস আইনসভার প্রধান (১৯৭৭) নিযুক্ত হন। ত্রিপুরাকে পূর্ণরাজ্যে উন্নীত করার ক্ষেত্রে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্তরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি যুক্ত ছিলেন।
৭১-এ বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থী সমস্যা দেখা দিলে ত্রিপুরা সরকারের কৃষি, খাদ্য ও বন উপমন্ত্রী মনসুর আলীকে ত্রাণ, পুনর্বাসন ও শরণার্থীবিষয়ক উপমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধা শিবিরের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখতেন। প্রতিনিয়ত তিনি শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শন করে ত্রাণকার্যে সহযোগিতা করতেন। প্রায়শই তিনি সীমান্ত এলাকায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে শরণার্থীদের আগমন তদারকি করতেন। ১৯৮৭ সালের ৮ই এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালের ২০শে অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার মনসুর আলী-কে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা (মরণোত্তর) প্রদান করে। [কাজী সাজ্জাদ আলী জহির]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড