You dont have javascript enabled! Please enable it! বীর প্রতীক মতিউর রহমান - সংগ্রামের নোটবুক

বীর প্রতীক মতিউর রহমান

মতিউর রহমান, বীর প্রতীক (জন্ম ১৯৪৯) বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৪৯ সালের ১লা জানুয়ারি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার চর মল্লিকপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আবদুর কাদের মৃধা এবং মাতার নাম মেহেরুন নেছা। তাঁর স্ত্রীর নাম ইসরাত জাহান সালমা। মতিউর রহমান ১৯৬৭ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গেরিলা স্পেশাল সার্ভিসে যোগ দিয়ে পরবর্তীতে কমান্ডো ফোর্সের সেনা হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে তিনি ঢাকা পুরাতন বিমান বন্দরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ল্যান্স নায়েক পদে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু ২৫শে মার্চ রাতে পাকবাহিনীর অমানুষিক নির্যাতন ও লুটতরাজ দেখে তিনি গোপনে পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পক্ষ ত্যাগ করে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ অবলম্বনকারীদের নিয়ে গঠিত রেজিমেন্টটির ‘সি’ কোম্পানিতে যোগ দেন।
১৪ই এপ্রিল মতিউর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গঙ্গাসাগর এলাকায় অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর একটি দলে যোগ দেন এবং সেখান থেকে পাকিস্তানি সেনাদের বিরতিহীন আক্রমণের মোকাবিলা করেন। বেশ কয়েক দিন প্রতিরোধ করার পর এক পর্যায় বিপর্যয় এড়ানোর জন্য মুক্তিযোদ্ধারা হাওরের ভেতর দিয়ে পিছিয়ে যান এবং এ-সময় সহযোদ্ধা মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ তাঁদের কভার দেয়ার জন্য ফায়ারিং-এর দায়িত্ব নেন। সেবারের মতো মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নতুন আশ্রয়ে যেতে সক্ষম হন। তবে এ ঘটনার পূর্বে মতিউর রহমান ও তাঁর সহযোদ্ধারা ৭ই এপ্রিল মেঘনা নদীতে পাকিস্তানি সেনাদের একটি ছোট জাহাজ গোলার আঘাতে ডুবিয়ে দেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান-কে ‘বীর প্রতীক’ রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করা হয়। [এস এম মাহফুজুর রহমান]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড