মণিপুরঘাট বধ্যভূমি (কিশোরগঞ্জ সদর)
মণিপুরঘাট বধ্যভূমি (কিশোরগঞ্জ সদর) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে এর অবস্থান। এক সময় নরসুন্দা নদীপথে ভারতের মণিপুর এলাকা থেকে অনেক বড় ব্যবসায়ী বাণিজ্যিক প্রয়োজনে কিশোরগঞ্জে আসতেন। শহরতলীর এ স্থানটিতে তাদের বাণিজ্যতরী নোঙর করত বলে ধীরে-ধীরে এখানে একটি বিখ্যাত ঘাটের সৃষ্টি হয়। এ স্থানে নরসুন্দা নদীর ওপর একটি পাকা ব্রিজ ছিল। কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশন সংলগ্ন জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় অবস্থিত হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অফিস ও নির্যাতনকেন্দ্র থেকে মণিপুরঘাট আধা কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধকালে জুন থেকে নভেম্বরের মধ্যে দখলদার পাকিস্তানি সেনারা এ ঘাটটিকে বধ্যভূমিতে পরিণত করে। ডাকবাংলোর নির্যাতনকেন্দ্র থেকে এখানে এনে অনেককে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে। বিভিন্ন পর্যায়ে এ বধ্যভূমিতে অন্তত ১২ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। নিহতদের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- কার্তিক নাথ (পিতা শিবা নাথ, প্যারাভাঙ্গা, কিশোরগঞ্জ সদর), আব্দুস ছাত্তার গন্ধী (পিতা পিয়ার বক্স গন্ধী, বত্রিশ, নূরানী সড়ক, কিশোরগঞ্জ শহর), আ. রাশিদ ভূঁইয়া (পিতা জমধর ভূঁইয়া, স্বল্পমারিয়া ভূঁইয়াবাড়ি, কিশোরগঞ্জ সদর) ও মোজাফ্ফর আলী (পিতা ইদু শেখ, বগাদিয়া, কিশোরগঞ্জ সদর)। [জাহাঙ্গীর আলম জাহান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড