মজুপুর গণহত্যা (লক্ষ্মীপুর সদর)
মজুপুর গণহত্যা (লক্ষ্মীপুর সদর) সংঘটিত হয় ২৪শে এপ্রিল। এতে ৩৫ জন নিরীহ মানুষ হত্যার শিকার হন।
মজুপুর গ্রামের অবস্থান লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ঝুমুর সিনেমা হলের সামান্য পশ্চিমে। লক্ষ্মীপুর সদরে পাকবাহিনীর অনুপ্রবেশ ও ক্যাম্প স্থাপনের আগে তারা খবর পায় যে, মজুপুর গ্রামে সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ ও মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান গ্রহণ এবং স্থানীয় ছাত্র-জনতা ও সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ও ছুটিতে আসা সৈনিকরা – পাকসেনাদের প্রতিরোধের পরিকল্পনা করছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্ভাব্য প্রতিরোধ নির্মূল করার উদ্দেশ্যে হানাদার বাহিনী বেগমগঞ্জের চৌরাস্তার টেকনিক্যাল হাইস্কুল ক্যাম্প থেকে বের হয়ে মজুপুরে অতর্কিতে হামলা চালায়। হানাদার বাহিনীর হামলার খরব পেয়ে গ্রামের মানুষ ভয়ে চারদিকে পালাতে থাকে। হানাদাররা গ্রামে ঢুকেই সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। এতে অন্তত ৩৫ জন মানুষ প্রাণ হারান। নিহতদের প্রায় সবাই ছিলেন লক্ষ্মীপুর ও মজুপুর গ্রামের অধিবাসী। সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে অনেকে মারাত্মকভাবে আহত ও পঙ্গু হন। নিহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে, তারা হলেন— ধীরেন্দ্র পাল, পার্বতী পাল, আনছার আলী, চৌধুরী মিয়া, তরিক আলী, হাছন আলী, হাজরা খাতুন, জাফর আহম্মদ ও তিন বছরের শিশু আবুল বসর। হানাদাররা গ্রামের বহু বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। লক্ষ্মীপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মজুপুর গণহত্যা এক নির্মম ঘটনা হিসেবে পরিচিত। [মো. ফখরুল ইসলাম]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড