You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভুরুঙ্গামারী পাইলট স্কুল গণকবর (ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম)

ভুরুঙ্গামারী পাইলট স্কুল গণকবর (ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম) কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় অবস্থিত। সিও অফিস থেকে অর্ধকিলোমিটার দূরে ভুরুঙ্গামারী হাটের উত্তর-পূর্ব দিকে প্রায় ২ একর জমিতে এ গণকবর অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় এখানে কয়েকশ মানুষকে কবর দেয়া হয়।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৮শে মে ভুরুঙ্গামারী দখল করে নেয়। ১৪ই নভেম্বর পর্যন্ত তারা তাদের সহযোগী দালাল, রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও ইপিকাপ- সদস্যদের নিয়ে ভুরুঙ্গামারীতে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করে। তারা ১০টির বেশি গণকবরে অনেকের মরদেহ পুঁতে রাখে। শহরের নিকটবর্তী ও দূরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে এনে নারী-পুরুষকে নির্যাতন শেষে হত্যা করে এসব গণকবরে ফেলে দেয়া হতো।
স্বাধীনতার পর পাইলট স্কুল গণকবরে কয়েকশ মানুষের মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় জনগণ এখানে কুকুর-শেয়ালকে বহু লাশ খেতে দেখেছে। এখানে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের প্রায় সকলের নাম- পরিচয় হারিয়ে গেছে। এখানে সংঘটিত কিছু লোমহর্ষক ঘটনা এখনো মানুষকে তাড়িত করছে। যেমন, ২৭শে মে মুক্তিবাহিনীর ধরলানদী অবরোধ ভেঙ্গে পড়লে পাকবাহিনী নছির ব্যাপারীর হাটের দক্ষিণে হাসনাবাদের চণ্ডিপুরে এম্বুশ করে ২৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজকে আটক করে। এরপর তাঁকে ট্রাকের পেছনে বেঁধে ভুরুঙ্গামারী পর্যন্ত নিয়ে যায়। প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ টেনে-হিঁচড়ে তাঁকে ভুরুঙ্গামারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনে। এরপর ৪-৫ দিন ধরে তাঁর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। অন্য অনেক লাশের সঙ্গে তাঁর লাশ গণকবরে ফেলে রাখে। অপর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদসহ ৭ জনকে এ পাইলট স্কুলে এনে হত্যা করে একই গণকবরে তাঁদের লাশ পুঁতে রাখে। এ হত্যাকাণ্ডে জামায়াত নেতা হাজী কমরউদ্দিন ও হাজী বছির উদ্দিনসহ অন্য দালালরাজাকারআলবদররা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। [এস এম হারুন অর রশীদ লাল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!