ভুরুঙ্গামারী সিও অফিস গণকবর (ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম)
ভুরুঙ্গামারী সিও অফিস গণকবর (ভুরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম) উপজেলা সদরের পশ্চিমে বাঘভাণ্ডারমুখী রাস্তার দক্ষিণ দিকে প্রায় ৩ একর জমির ওপর অবস্থিত। ভুরুঙ্গামারী সার্কেল অফিসার (ডেভেলপমেন্ট)-এর কার্যালয় প্রাঙ্গণে এর স্থান। এখানে পাকবাহিনী ও রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ যুবকদের ধরে এনে বাংকারে অমানবিক নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করত। এ গণকবরে শতাধিক নারী-পুরুষকে কবর দেয়া হয়।
১৯৭১ সালে ভুরুঙ্গামারী সিও অফিস এলাকায় কয়েকটি একতলা এবং দোতলা ভবন ছিল। সেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রধান ক্যাম্প ছিল। ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় অনেক বাংকার খনন করে পাকসেনারা অবস্থান করত। সিও অফিসের মূল ভবনের দোতলায় এবং সার্কেল অফিসারের বাসভবনে মেয়েদের আটকে রাখা হতো। আটক নারীরা প্রতিদিন পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতেন। ভুরুঙ্গমারীতে মুক্তিযোদ্ধাদের দখল প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তানি ক্যাপ্টেন আতাউদ্দিন খাঁ-র সঙ্গে একজন বীরাঙ্গনার মৃতদেহ সিও অফিসের সামনে বিধ্বস্ত বাংকার থেকে উদ্ধার করা হয়। ভুরুঙ্গামারী সিও অফিস গণকবরে প্রায় ১০০ জন মানুষের হাড় ও মাথার খুলি পাওয়া যায়। সিও অফিসের ড্রেনে ১৫ জন মানুষের কংকাল পাওয়া যায়।
সিও অফিস ক্যাম্পে পাকবাহিনীকে হত্যা ও নির্যাতনে সহায়তা করত জামায়াত নেতা হাজী কমরউদ্দিন, মওলানা আব্দুল লতিফ, আমজাদ হোসেন মাস্টার, রাজাকার কমান্ডার আব্দুর বাড়ি, মওলানা আব্দুল আজিজ (পাইকেরছড়া), সোনা খলিফা (কামাতআঙ্গারীয়া), খোকা দালালসহ অন্যরা। [এস এম হারুন অর রশীদ লাল]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড