You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভুরঘাটা যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর)

ভুরঘাটা যুদ্ধ (কালকিনি, মাদারীপুর) সংঘটিত হয় ১৪ই নভেম্বর। কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটায় স্থাপিত পাকসেনা ও মিলিশিয়াদের ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করলে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়। এ-যুদ্ধে পাকসেনা ও মিলিশিয়ারা পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেলে তাদের প্রচুর অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কে ভুরঘাটা নামক স্থানে সেপ্টেম্বর মাসের পরে পাকিস্তানি সেনা ও মিলিশিয়াদের একটি ক্যাম্প স্থাপিত হয়। মহাসড়কে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গাড়ি চলাচল নির্বিঘ্ন রাখা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বারা ভুরঘাটা ব্রিজ যাতে আক্রান্ত না হয় তা নিশ্চিত করাই ছিল ক্যাম্প স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য। পাকবাহিনী মাদারীপুর এ আর হাওলাদার জুটমিলে শক্তিশালী ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। এ ঘাঁটি থেকে টেকেরহাট, ভুরঘাটা, কালকিনি, সাহেবরামপুর, টর্কি বন্দর ও ফাসিয়াতলাহাট এলাকায় পাকিস্তানি মেজর পায়েন্দা খানের নেতৃত্বে আলবদর, -আলশামস রাজাকার ও শান্তি কমিটির সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপারেশন পরিচালিত হতো। কালকিনি থানার বাঙালি ওসি অসংখ্য নিরীহ মানুষকে ধরে ভুরঘাটা ক্যাম্পে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। ভুরঘাটা ক্যাম্পে পাঞ্জাবি রেজিমেন্টের এক দুর্ধর্ষ হাবিলদার ছিল। নিরীহ মানুষদের ধরে ভুরঘাটার লালব্রিজে এনে নৃশংসভাবে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করত। এ হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও নিরীহ মানুষ হত্যার প্রতিশোধ নিতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এস্কান্দার শিকদারের নেতৃত্বে ১৪ই নভেম্বর ভুরঘাটা ক্যাম্প আক্রমণ করা হয়। পাকসেনারাও পাল্টা-আক্রমণ করে। কিন্তু আক্রমণের কয়েক মিনিটের মধ্যে অবস্থা প্রতিকূল দেখে পাকসেনারা ক্যাম্প ছেড়ে বরিশালের দিকে পালিয়ে যায়। ক্যাম্পে ফেলে যাওয়া প্রচুর অস্ত্র, গোলাবারুদ ও রসদ মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে। বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধারা সিডিখান ক্যাম্পে ফিরে যান। এ ঘটনার একদিন পর পাকিস্তানি সেনারা কমান্ডার এস্কেন্দার শিকদার ও মিয়াজ উদ্দিন খানের ক্যাম্প লক্ষ করে ভুরঘাটা থেকে মর্টারের শেল নিক্ষেপ করে। তাদের নিক্ষিপ্ত দুটি শেল সিডিখান গ্রামে বিভূতি ভূষণ মণ্ডলের বাড়ির কাছে বিস্ফোরিত হয়। [বেনজীর আহম্মদ টিপু]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!