ভাবিচা গণহত্যা (নিয়ামতপুর, নওগাঁ)
ভাবিচা গণহত্যা (নিয়ামতপুর, নওগাঁ) সংঘটিত হয় ২রা মে। নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা গ্রামে পাকসেনাদের দ্বারা সংঘটিত এ গণহত্যায় ৫ জন নিরীহ নারী-পুরুষ প্রাণ হারায়।
ঘটনার দিন সকাল ১০টার দিকে মান্দা থানা থেকে আসা পাকসেনারা ৩টি গাড়ি নিয়ে ভাবিচা গ্রামের ওপর দিয়ে নিয়ামতপুর থানার দিকে যায়। যাওয়ার সময় তারা নিয়ামতপুর উত্তরবাড়ির দেওয়ান আজিজুর রহমানের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পাকসেনাদের দেখে ভাবিচা গ্রামের মানুষ ছোটাছুটি শুরু করলে তারা গ্রামবাসীকে বাড়িতে অবস্থান করতে নির্দেশ দেয়। ফেরার পথে বিকেল ৪টায় তারা ভাবিচা গ্রামের বিষ্ণুপদ সরকারের বাড়ির সামনে এসে অবস্থান নেয়। এ- সময় বিষ্ণুপদ সরকারের পুত্র সুকুমার সরকার বারান্দায় দাঁড়িয়ে মুড়ি খাচ্ছিল। পাকসেনারা তার মুড়ি কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয় এবং বাড়ির লোকজনকে হুমকি দেয়। তারা তখন চারদিকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ-সময় কমলা সুন্দরী নামে এক নারী পালানোর চেষ্টা করলে পাকসেনারা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তারা ৪ জন গ্রামবাসীকে ধরে প্রথমে গাছে বেঁধে চরম প্রহার করে। অতঃপর তাদের একটি খালের ধারে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পাকসেনারা বিষ্ণুপদ সরকারের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। ভাবিচা গণহত্যায় নিহত ৫ জনের মধ্যে ৪ জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন— ভগীরথ মণ্ডল (পিতা কৈলাশ মণ্ডল), জগদীশ দাস (পিতা সতীশ দাস), বিমল মহন্ত (জগদীশ দাসের শ্যালক; মাড়িয়া, তানোর, রাজশাহী) ও কমলা সুন্দরী (স্বামী নগেন সরকার)। ভাবিচা গ্রামে এখনো কোনো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়নি। [চিত্তরঞ্জন মিশ্র]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড