ভাঙ্গুরা স্মৃতিসৌধ (ভাঙ্গুরা, পাবনা)
ভাঙ্গুরা স্মৃতিসৌধ (ভাঙ্গুরা, পাবনা) পাবনা জেলার ভাঙ্গুরা উপজেলায় অবস্থিত। মুক্তিযুদ্ধে ভাঙ্গুরা উপজেলায় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও অনেক নিরীহ মানুষ শহীদ হন। তাঁদের স্মরণে ভাঙ্গুরা বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিমে ২০১১ সালে ২০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। মো. মকবুল হোসেন এমপি-র উদ্যোগে প্রায় দশ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ স্মৃতিসৌধের নির্মাণ শেষ হয়। শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি ২০১৩ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন করেন। স্মৃতিসৌধে উৎকীর্ণ ফলকে ১৬ জন শহীদের নাম রয়েছে। তাঁরা হলেন- খবির উদ্দিন শেখ (পিতা ছোবান শেখ, মসজিদপাড়া, ভাঙ্গুরা), আখের আলী শেখ (পিতা সাহেবদী শেখ, মসজিদপাড়া), নূর মোহাম্মদ শেখ (পিতা রিয়াজ উদ্দিন শেখ, মসজিদপাড়া), ভাদু শেখ (পিতা নিলাম শেখ, মসজিদপাড়া), হাজী খবির উদ্দিন (পিতা নিল চাঁদ শেখ, মসজিদপাড়া), সুকেশ কুন্ডু (ভাঙ্গুরা বাজার), কেসমত খাঁ (পিতা নাছের খাঁ, পাড় ভাঙ্গুরা), আব্দুর রহমান (পিতা আয়াজ খাঁ, পাড় ভাঙ্গুরা), মোজাহার আলী (পিতা তছির উদ্দিন, টলটলিয়াপাড়া, ভাঙ্গুরা), আব্দুল আজিজ মাস্টার (পিতা ফকির উদ্দিন, টলটলিয়াপাড়া), আব্দুল কাশেম (পিতা কছির প্রামাণিক, রাঙালিয়া, ভাঙ্গুরা), শাহজাহান আলী (পিতা জাবেদ আলী প্রামাণিক, রাঙালিয়া), আবুল কালাম (পিতা নাছির মণ্ডল, রাঙালিয়া), বেলাল মোল্লা (পিতা এরফান মোল্লা, পুলিশ কনস্টেবল, চক্রপাড়া, ভাঙ্গুরা), ছোবাহান আলী (পিতা মাছিম সরকার, সেনাসদস্য, কলকতি, ভাঙ্গুরা) ও ইউনুছ আলী (পিতা দলিল আকন্দ, সেনাসদস্য, কলকতি, ভাঙ্গুরা)।
সেনাসদস্য ছোবাহান আলী ও ইউনুছ আলী ১৮ই অক্টোবর চট্টগ্রামে পাকবাহিনীর ২৫ রেজিমেন্টের সঙ্গে সংঘটিত সম্মুখ যুদ্ধে, মুক্তিযোদ্ধা বেলাল মোল্লা অপর একটি সম্মুখ যুদ্ধে এবং আবুল কালাম ও শাহজাহান আলী ভারত থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফেরার সময় জুলাই মাসে কুষ্টিয়ায় পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন। কমান্ডার আব্দুস সামাদের দলের মুক্তিযোদ্ধারা ভাঙ্গুরা বড়াল নদীতে হানাদার বাহিনীর নৌকা লক্ষ করে গুলি ছোড়েন। পরদিন পাকিস্তানি হানাদাররা নদীপথে যাওয়ার সময় এ এলাকায় বৃষ্টির মতো এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে অনেকে প্রাণ হারান। স্মৃতিফলকে উল্লিখিত ১১ জন এ ঘটনায় শহীদ। [মো. ছাবেদ আলী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড