ভাটেরচর ব্রিজ অপারেশন (গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ)
ভাটেরচর ব্রিজ অপারেশন (গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ) পরিচালিত হয় ১৪ই আগস্ট। এতে ব্রিজটি ধ্বংস হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা কুমিল্লা, নোয়াখালী ও বন্দর নগরী চট্টগ্রামের যোগাযোগের মাধ্যম ছিল গজারিয়া উপজেলা। তখন শীতলক্ষ্যা, মেঘনা ও গৌমতী ব্রিজ হয়নি। ভাটেরচর নদীর ওপর ভাটেরচর ব্রিজটি ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রিজ। তাই সড়কপথে পাকবাহিনীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধারা ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলার পরিল্পনা করেন। দুই নম্বর সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ, বীর উত্তম-এর নির্দেশে জুলাই মাসের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধারা ভাটেরচর ব্রিজ ভাঙ্গার পরিকল্পনা করেন। ব্রিজটি রেকি করার জন্য মো. রফিকুল ইসলামকে পাঠানো হয়। ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য আহমেদ মুনীর ভাষণকে অপারেশন কমান্ডারের দায়িত্ব দেয়া হয়। মো. রফিকুল ইসলামকে দেয়া হয় গাইড কমান্ডারের দায়িত্ব। সঙ্গে একটি প্রটেকশন টিম এবং এলএমজি, এসএমজি ও ২৬০ পাউন্ড এক্সপ্লোসিভ দেয়া হয়। ১২ই জুলাই গভীর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা ভাটেরচর ব্রিজের পিলারে এক্সপ্লোসিভ বেধে টাইম পেন্সিল ফিট করে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও এক্সপ্লোসিভ বিস্ফোরিত হয়নি। এ অবস্থায় পাকবাহিনী অতর্কিতে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে হোমনার মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক কোরাইশীসহ ৩ জন আহত হন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ১৪ই আগস্ট রাতে মুক্তিবাহিনীর থানা কমান্ডার মো. রফিকুল ইসলাম ও উপ-কমান্ডার মো. তোফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বোমা মেরে ব্রিজটি উড়িয়ে দেন। ফলে এতদঞ্চলে পাকবাহিনীর অবাধে চলাচল বিঘ্নিত হয়। [হাফিজ আহমদ ও সাহাদাত পারভেজ]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড