ভাগজোত যুদ্ধ (দৌলতপুর, কুষ্টিয়া)
ভাগজোত যুদ্ধ (দৌলতপুর, কুষ্টিয়া) সংঘটিত হয় জুন মাসে। দৌলতপুর উপজেলার ভাগজোত নদীর ঘাটের কাছের এ-যুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কমান্ডার আবুল কাশেম সরকার। যুদ্ধে ৪ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়। প্রতিশোধস্বরূপ এক মুক্তিযোদ্ধার পিতাকে হানাদাররা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। মহিষকুণ্ডি ইপিআর ক্যাম্পে পাকিস্তানি বাহিনী ক্যাম্প স্থাপনের পর প্রায়ই ভাগজোত এলাকায় টহলে আসত। টহলে এসে তারা সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন এবং ধন- সম্পদ লুণ্ঠন করত। হানাদার বাহিনীর অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. আবুল কাশেম সরওয়ার তাঁর বাহিনী নিয়ে জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে একদিন খুব সকালে ভাগজোত নদীর ঘাটে এম্বুশ করেন। সকাল ৯টার দিকে পাকবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের এম্বুশে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। এতে ৪ জন পাকিস্তানি সৈন্য নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনার পর মুক্তিযোদ্ধারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে নিরাপদ এলাকায় চলে যান। এদিন বিকেলে প্রতিশোধ নিতে পাকসেনারা ঘটনাস্থলে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মো. আমিরুল ইসলামের পিতা মো. ইছারউদ্দিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে।
কমান্ডার মো. আবুল কাশেম সরওয়ারের নেতৃত্বে প্রাগপুর ইউনিয়ন ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধারা এ-যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ভাগজোত যুদ্ধ স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। [মো. ছাদিকুজ্জামান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড