You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভবেরচর ব্রিজ অপারেশন (গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ)

ভবেরচর ব্রিজ অপারেশন (গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ) পরিচালিত হয় ৭ই ডিসেম্বর। কিন্তু ব্রিজ ধ্বংসের আগেই পাকবাহিনী আক্রমণ করলে মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান জাহাঙ্গীরসহ ১১ জন শহীদ হন। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের পাল্টা আক্রমণে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়।
মুক্তিযোদ্ধারা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারেন যে, ৭ই ডিসেম্বর পাকবাহিনী আলীপুরা, পৈক্ষার পাড়, ভিটিকান্দি, সাতকাহনিয়া, ভবেরচর ও বাউশিয়া ইউনিয়নের মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো আক্রমণ করবে। এ খবর পাওয়ার পর গজারিয়া থানা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হাফিজ আহমদ, থানা কমান্ডার মো. রফিকুল ইসলাম, গ্রুপ কমান্ডার আব্দুর রহমান ও আব্দুস ছাত্তার চিশতি এবং পশুপালন ডাক্তার মো. শফিকুল ইসলাম ভবেরচর পশু চিকিৎসালয়ে এক বৈঠক করেন। বৈঠকে পাকবাহিনীকে প্রতিহত করার পরিকল্পনা করা হয়। সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, পাকবাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে ভবেরচর ঈদগাহ সংলগ্ন মহাসড়কের ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলা। এতে পাকবাহিনীর আক্রমণ বাধাগ্রস্ত হবে এবং সেই সুযোগে প্রতি-আক্রমণ করে তাদের নির্মূল করা সম্ভব হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী হাফিজ আহমদের নেতৃত্বে ব্রিজ ভাঙ্গা ও কমান্ডার মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭ই ডিসেম্বর ব্রিজ ভাঙ্গার সময় পাকবাহিনী মহাসড়কের দুদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এতে মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান জাহাঙ্গীরসহ ১০ জন শহীদ হন। পাকবাহিনীর আক্রমণের জবাবে কমান্ডার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে তোফাজ্জল হোসেন, আব্দুর রহমান, আব্দুল আউয়াল (ইউনিয়ন কমান্ডার), সোলায়মান, ওয়ালিউল্লাহ ও শফিউল্লাহসহ মুক্তিযোদ্ধারা পাল্টা আক্রমণ চালালে পাকবাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। ফলে মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী ৭-৮টি গ্রাম ও গ্রামবাসী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পায়।
ভবেরচর ব্রিজ অপারেশনে যাঁরা শহীদ হন, তাঁরা হলেন- মতিউর রহমান জাহাঙ্গীর (পিতা সোলাইমান মাস্টার, পৈক্ষারপাড়), শাহজালাল মৃধা (পিতা আশরাফ আলী মৃধা, আলিপুরা), মোহাম্মদ হোসেন বেপারী (পিতা ইউনুস বেপারী, আলিপুরা), মো. ইব্রাহিম (পিতা তমিজ উদ্দিন, লক্ষীপুর), আব্দুল আউয়াল (পিতা আব্দুর রহমান সরকার, ভবেরচর), সাহাদাত হোসেন (পিতা আমজাদ হোসেন, ভবেরচর), ইসমাইল সরকার (পিতা আনছব আলী সরকার, ভবেরচর), হরিপদ ঠাকুর (পিতা রায়মন ঠাকুর, ভবেরচর), উমেষ মালী (পিতা স্বসতি মালী, ভবেরচর), ইদ্রিস আলী (পিতা ইসমাইল, ভবেরচর) ও রুহুল আমিন (পিতা সাইজ উদ্দিন, ভবেরচর)। [হাফিজ আহমদ]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!