বোরহানগঞ্জ বাজার যুদ্ধ (বোরহানউদ্দিন, ভোলা)
বোরহানগঞ্জ বাজার যুদ্ধ (বোরহানউদ্দিন, ভোলা) সংঘটিত হয় ২৯শে অক্টোবর। এতে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা ও বেশ কয়েকজন গ্রমাবাসী শহীদ হন। অপরপক্ষে ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।
বোরহানউদ্দিন বাজার থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্ব- দক্ষিণে বোরহানগঞ্জ বাজারের অবস্থান। এটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। ২৯শে অক্টোবর বোরহানউদ্দিন খেয়াঘাট যুদ্ধের পর পাকসেনাদের ২০-২৫ জনের একটি দল সেখান থেকে হেঁটে আসতে থাকলে আচমত বাহিনী পাকবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। পাকবাহিনী পাল্টা জবাব দেয়। মুক্তিবাহিনীর চোরাগোপ্তা হামলার কারণে পাকবাহিনী বাকলাই বাড়ির পাশে ধোপাবাড়ি ঢুকে পড়ে। সেখানে পাটোয়ারী বাড়ির সফিজল, ওহাব পাটোয়ারী, কাঞ্চন ও হাসমত মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে। অতঃপর তারা পার্শ্ববর্তী কয়েকটি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান মজিবল কেরানী, আব্দুল হাকিম, নুরুল ইসলাম মাস্টার, আজহার বেপারী ও ইসমাইল। পাকবাহিনীর একজন সদস্য পথ ভুলে রানীগঞ্জ বাজারের দিকে গেলে বাজারের খালে মফিজউদ্দিন ও মন্নান হাওলাদার তাকে খালে চুবিয়ে মেরে ফেলেন। অবশিষ্ট পাকসেনারা বোরহানগঞ্জ বাজারের দিকে যায়। পাকবাহিনীর অপর একটি দল ভোলা শহর থেকে সড়ক পথে বোরহানগঞ্জ বাজারে এসে মিলিত হয়ে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। তাদের গুলিতে আবুল কাসেম, মাহমুদউল্যাহসহ ৬-৭ জন মানুষ নিহত হয়। ইতোমধ্যে হাইকমান্ড মো. সিদ্দিকুর রহমান ও আচমত মিয়া একত্রিত হয়ে আব্দুল জব্বার মিয়ার বাড়ির বাগানে অবস্থান নেন। বোরহানগঞ্জ বাজার থেকে – পাকবাহিনী বোরহানউদ্দিনে ফেরার সময় আব্দুল জব্বার মিয়ার বাড়ির বাগানের কাছে এলে হাইকমান্ড সিদ্দিকুর রহমান ও আচমত মিয়ার দল পাকবাহিনীকে আক্রমণ করেন। তাঁদের গুলিতে পাকসেনাদের গাড়ির চাকা ফেটে যায়। পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় আধাঘণ্টা যুদ্ধ চলে। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা তানসেন ও জলিল শহীদ হন এবং ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। অতঃপর পাকবাহিনী দ্রুত বোরহানউদ্দিনে ফিরে এসে সার্কেল অফিসারের কার্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে। এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন হাইকমান্ড মো. সিদ্দিকুর রহমান ও আচমত মিয়া। [শিমুল চৌধুরী]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড