ব্রহ্মপুত্র নদে বার্জ অপারেশন (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ)
ব্রহ্মপুত্র নদে বার্জ অপারেশন (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ) পরিচালিত হয় নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার অন্তর্গত আনন্দবাজার ঘাট থেকে এক কিলোমিটার দূরে। বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা তখন আনন্দবাজারে অবস্থান করছিলেন। তাঁরা কুরিয়ার মারফত খবর পান যে, পাকসেনাদের তত্ত্বাবধানে নারায়ণগঞ্জ থেকে বার্জে করে কাঁচা পাট, পাটের বেল ও চায়ের প্যাকেট চট্টগ্রাম বন্দরে নেয়া হচ্ছে। সঙ্গে-সঙ্গে তাঁরা এসব মালামাল হস্তগত করার জন্য বার্জে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। এ উদ্দেশ্যে তাঁরা আনন্দবাজার ঘাট থেকে নৌকায় করে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁদের অতর্কিত আক্রমণে দিশেহারা পাকসেনারা বিপদ বুঝে আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযোদ্ধারা বার্জের মালামাল বিক্রি করে প্রচুর অর্থ পান। সেখান থেকে কিছু অর্থ তাঁরা আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য রাখেন, কিছু জনসাধারণের মধ্যে বণ্টন করেন এবং অবশিষ্ট মোটা অঙ্কের অর্থ বাংলাদেশ সরকারকে প্রদান করেন।
বার্জ অপারেশনে বন্দরের রোকনুদ্দীন, নুরুল ইসলাম মাস্টার, এসহাক মোল্লা, আবুল কাশেম, মোশারফ হোসেন খান, আজাদ খান, কাজী নাসির, মাইনুদ্দীন, শাহেন শাহ, মুছাপুরের মো. শফি, মদনগঞ্জের কলাগাছিয়ার দীন মোহাম্মদ, দীন ইসলাম, বন্দরের গ্রুপ কমান্ডার সেলিমের গ্রুপের মো. নুরুল ইসলাম, ধামগড় ইউনিয়নের কাজীপাড়ার হাতাবউদ্দীন, জাঙ্গালের মো. রফিক, মো. নুরুল হক, সোনারগাঁর দ্বিতীয় থানা কমান্ডার মাসুদুর রহমান মাসুদের গ্রুপ ও আব্দুল মালেকের গ্রুপ যৌথভাবে অংশগ্রহণ করে। [রীতা ভৌমিক]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড