বোয়ালমারী হত্যাকাণ্ড (বোয়ালমারী, ফরিদপুর)
বোয়ালমারী হত্যাকাণ্ড (বোয়ালমারী, ফরিদপুর) সংঘটিত হয় মে থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে। এ-সময় হানাদারদের হাতে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। মে থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানা সংলগ্ন গ্রামগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। এ-সময় তারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় শতাধিক নর-নারীকে হত্যা এবং অসংখ্য বাড়িতে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগ করে।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাকিস্তানি সেনারা রাজাকারদের সহায়তায় ময়েনদিয়া বাজার লুট করে আগুন লাগিয়ে দেয়। এদিন হাসামদিয়ায় যজ্ঞেশ্বর সাহাসহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে। তারা ডা. ননীগোপাল সাহা ও যজ্ঞেশ্বর সাহার বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। তখন পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে ছিল খাড়দিয়ার বাচ্চু রাজাকার (মাওলানা আবুল কালাম আজাদ)। এদিন বুলেটবিদ্ধ একজন বেঁচে গেলে বাচ্চু রাজাকার তাকে পুনরায় ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে। মে মাসেই পাকসেনা ও রাজাকাররা খরসুতি ও গোহাইলবাড়িতে নারায়ণ চন্দ্র কুণ্ডু, হরিপদ মণ্ডলসহ ৮-১০ জনকে গুলি করে হত্যা করে। এদিন তারা বেশকিছু বাড়ি লুটপাট শেষে পুড়িয়ে দেয়|
১৪ই আগস্ট বোয়ালমারী থানা আক্রমণের পর ১৬ই আগস্ট পাকিস্তানি সেনারা গুনবাহা, চাপলডাঙ্গা, চতুল, ছোলনা, বাইখীর, শিরগ্রাম-সহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০ জনকে হত্যা করে। এদিন বোয়ালমারীর বেশ কয়েকটি বাড়িতে ব্যাপক লুণ্ঠন চালায়। লুণ্ঠন শেষে এসব বাড়িতে আগুন দেয়। চতুলের মৃধারবাড়িতে টেপু মৃধা, রউফ মৃধাসহ কয়েকজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ছোলনা ও বাইখীরেও লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পাকিস্তানি সেনারা কামার গ্রামের সঞ্জয় কুমার সাহা, চতুলের পাঁচু শেখ, খেপু বসু, বাসন্তী, ছোলনার কালা বিশ্বাস, গনি মুন্সী, মোসলেম কারিকর, গুনবাহার নরেন শীল, সারোয়ার শেখ, আওয়াল শেখ, বাইখীরের আবদুর রাজ্জাক শেখ প্রমুখকে হত্যা করে। [আবু সাঈদ খান]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড