You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.23 | বৈদ্যেরবাজার পাকক্যাম্প অপারেশন (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ) - সংগ্রামের নোটবুক

বৈদ্যেরবাজার পাকক্যাম্প অপারেশন (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ)

বৈদ্যেরবাজার পাকক্যাম্প অপারেশন (সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ) পরিচালিত হয় ২৩শে অক্টোবর বিকেলে। এতে নেতৃত্ব দেন সোনারগাঁর প্রথম থানা কমান্ডার আব্দুল মালেক (হামসাদী, বৈদ্যেরবাজার, সোনারগাঁ)। নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানাধীন এ ক্যাম্প থেকে চার-পাঁচজন পাকসেনা প্রতিদিন বেবিট্যাক্সিতে চড়ে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত টহল দিত। এটা বন্ধ করার উদ্দেশ্যেই অপারেশনটি পরিচালিত হয়।
অপারেশনের ৫-৭ দিন পূর্বে সোনারগাঁর সহকারী কমান্ডার হাবিবউল্লাহ (পঞ্চবটী, আনন্দবাজার, সোনারগাঁ) অপারেশন স্থল রেকি করেন। অপারেশনের দিন কমান্ডার আব্দুল মালেক, সহকারী কমান্ডার হাবিবউল্লাহ, কাউসার (আনন্দবাজার, সোনারগাঁ পৌরসভা), সুলতান আহমেদ বাদশা (দুলালপুর, সোনারগাঁ পৌরসভা), সানাউল্লাহ (আজমপুর, সোনারগাঁ পৌরসভা), সোনারগাঁর জামপুর গ্রামের আব্দুল বাতেন মোল্লা, বাতেন, মতিন, বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামসাদী গ্রামের দাউদ, সোনারগাঁ পৌরসভার হাতকোপা গ্রামের মনির, পিরোজপুর ইউনিয়নের ঝাউচর গ্রামের মো. আলীর গ্রুপ, আউয়াল, মজিবর রহমান ও সোহেল নয়াগাঁও থেকে নৌকায় চড়ে সোনারগাঁ পার্কের সামনে আসেন। পার্কের আধমাইল দূরে পেতারগা পুলের দুপাশে দুজন মুক্তিযোদ্ধা পাহারারত অবস্থায় থাকেন এবং সুলতান আহমেদ বাদশা পেতারগা পুলের এক পাশে মাইন পুঁতে অন্য পাশে পার্কের জঙ্গলে এসে এম্বুশ করেন। আধঘণ্টা পর পাকসেনাদের টহল বেবিট্যাক্সি ঐ স্থানে আসামাত্র মাইনটি বিস্ফোরিত হয় এবং দুজন পাকসেনা নিহত হয়, অপর দু-তিনজন দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার হতে পারে একথা চিন্তা করে মুক্তিযোদ্ধারা সোনারগাঁ পার্ক থেকে পানাম বাজার পর্যন্ত রাস্তায় মাইন পুঁতে রাখেন এবং রাস্তার পাশে পজিশন নেন। পাকসেনারা ঠিকই সোনারগাঁ জাদুঘরের কাছে কালীবাড়ি দিয়ে পানাম আসে। তারা সোনারগা পার্কের রাস্তা দিয়ে পানাম বাজারে প্রবেশ করার সময় দু-একটি মাইন বিস্ফোরিত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ করলে মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ চালান। প্রায় আড়াই ঘণ্টা যুদ্ধ করে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। পাকসেনারা ঐ এলাকার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয় এবং পানাম বাজার লুট করে। পরের দিন ২৪শে অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধারা আবার এম্বুশ করেন এবং তাঁদের কাছে গোলাবারুদ পৌছে দেয়ার সময় সোনারগাঁ জাদুঘরের পাশে সুরেশ পালের বাড়ির সামনে সোনারগাঁর গোয়ালদি গ্রামের হান্নান ভূঁইয়ার ছেলে শামসুজ্জামান মজনু পাকসেনাদের গুলিতে শহীদ হন। [রীতা ভৌমিক]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড