বেলংকা গণহত্যা (তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ)
বেলংকা গণহত্যা (তাড়াইল, কিশোরগঞ্জ) সংঘটিত হয় ১৬ই নভেম্বর। এতে ৮ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। ঘটনার দিন পাকসেনাদের আগমন টের পেয়ে কেন্দুয়া থানার পাইকুড়া গ্রাম থেকে একই বাড়ির বেশকিছু লোক প্রাণ বাঁচাতে নৌকাযোগে নদীপথে তাড়াইল হয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয়। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে এ সংবাদ তাড়াইল থানায় অবস্থানরত পাকসেনাদের কাছে পৌঁছে যায়। তারা তাড়াইল থানার পুলিশ অফিসার হাসেন আলীর (বর্তমানে তার ফাঁসির রায় হয়েছে) নেতৃত্বে তাড়াইলের অদূরে হুনুইর বিল থেকে নৌকাসহ তাদেরকে আটক করে। তাদের সঙ্গে ছিল ছনাটি, নগরকূল ও তাড়াইলের স্থানীয় দোসররা। আটককৃতদের তারা বেলংকার সামনে (বর্তমানে বটতলা ও মূল রাস্তার দক্ষিণ পাশে) খালের ধারে নিয়ে আসে এবং ৯ জনকে এক সঙ্গে দাঁড় করিয়ে গুলি করলে ৮ জন নিহত হয়। ঘটনাক্রমে একজন বেঁচে যায়। হানাদাররা নারীদেরকে ধরে তাড়াইল থানা মিলিটারি ক্যাম্পে নিয়ে আটক রেখে কয়েকদিন ধরে তাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। ভোরে বেলংকা গ্রামের লোকজন এসে মৃতদেহগুলো দেখতে পায় এবং সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। গ্রামবাসীরা তাকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়ে দেয় এবং মৃতদেহগুলো নদীতে ভাসিয়ে দেয়। বেলংকা গণহত্যায় যারা নিহত হন, তারা হলেন- সতীশ চন্দ্র ঘোষ, সুরেশ চন্দ্র ঘোষ, জগদীশ চন্দ্র ঘোষ, কৃষ্ণ চন্দ্র ঘোষ মিন্টু, রুহিনী চন্দ্র ঘোষ, ননী চন্দ্র ঘোষ, সুকুমার চন্দ্র ঘোষ ও নরেন্দ্র চন্দ্র ঘোষ। [ছাদেকুর রহমান রতন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড