বেলাই মাঠ বধ্যভূমি ও গণকবর (আক্কেলপুর, জয়পুরহাট)
বেলাই মাঠ বধ্যভূমি ও গণকবর (আক্কেলপুর, জয়পুরহাট) উপজেলা সদর থেকে ১ কিলোমিটার উত্তরে আমুট্ট মৌজায় আক্কেলপুর মহিলা কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থিত। এখানে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের গণকবর রয়েছে।
আক্কেলপুর উপজেলার এ বধ্যভূমির কাছেই রয়েছে একটি বড় গাছ। এ গাছে বাঙালিদের বেঁধে নির্যাতন ও পরে হত্যা করা হতো। হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দেয় হতো। এখানে স্থাপিত স্মৃতিফলকে শহীদদের নামের একটি তালিকা রয়েছে। তালিকায় গোপীনাথপুর গ্রামের আবের জোয়ারদার ও মকলেছ জোয়ারদার, বানদীঘি গ্রামের নবীর উদ্দীন, মাটিহাঁস গ্রামের নজের প্রামাণিক, নছির প্রামাণিক, আছের প্রামাণিক, ডা. বুলচান, তোফাজ্জল হোসেন তোফা এবং আরো ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ৬ জন গাড়োয়ানের নাম আছে। তবে এ বধ্যভূমি ও গণকবরে অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের কবর রয়েছে। এখানে একটি স্মৃতিফলক নির্মিত হয়েছে।
ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা নিজ জেলা বগুড়ায় ফিরছিলেন। কিন্তু পথ ভুল হওয়ায় ১৪ই জুন সকালে বেলাই নামে এক মাঠে ঐ দলের তরুণ মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোহাম্মদ পাইকার খোকন (পিতা মোজাম পাইকার, বগুড়া) রাজাকার ও দালালদের হাতে ধরা পড়েন। বাকিদের কেউ-কেউ তাড়া খেয়ে ফিরে যাবার পথে চক্রপাড়া গ্রামের নিকট এবং অন্যরা আউয়ালগাড়ি-রাজকান্দা মোড়ে তুলশীগঙ্গা নদী পার হবার প্রাক্কালে রাজাকারদালালদের হাতে ধরা পড়েন। রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। অমানুষিক নির্যাতনের পর তাঁদের হত্যা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোহাম্মদ পাইকার ওরফে খোকনের কবর পশ্চিম আমুট্ট গণকবরের মাত্র কয়েকশ গজ উত্তরে, আর অন্যদের স্থান হয় বেলাই মাঠ গণকবরে। [রেহানা পারভীন]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড