বেতডোবা গণহত্যা (কালিহাতী, টাঙ্গাইল)
বেতডোবা গণহত্যা (কালিহাতী, টাঙ্গাইল) সংঘটিত হয় মে মাসের শেষদিকে। বেতডোবা টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী উপজেলা সদরে ফটিকজানী নদীর উত্তর ও দক্ষিণ তীরে অবস্থিত হিন্দু অধ্যুষিত একটি গ্রাম। পাকবাহিনী এ গ্রামের পালপাড়ায় একটি গণহত্যা চালায়। উত্তর পালপাড়ার কুখ্যাত আলবদর আজগর আলী ও সেন্টু খাঁ এ গণহত্যায় প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেয়। তারা ৬ জনকে ঘর থেকে টেনে- হিঁচড়ে বাইরে এনে এবং প্রাণের ভয়ে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা অন্য একজনকে ধরে এনে প্রথমে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে এবং পরে ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। সেদিন এ গণহত্যায় শহীদ হন কানাই লাল পাল, নরেশ চন্দ্র পাল, সাধু চরণ পাল, কালিপদ পাল, ভোলা চন্দ্র পাল, সদন চন্দ্র পাল ও সুবল চন্দ্র পাল।
এছাড়া ১১ই ডিসেম্বর এখানে আরো একটি গণহত্যা সংঘটিত হয়। এদিন পাকবাহিনীর ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের পথে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বেতডোবা কবরস্থান সংলগ্ন কাশতলা- হামিদপুর রাস্তায় (পুরাতন রেজিস্ট্রি অফিসের সন্নিকটে) তাদের প্রতিরোধ করেন। এ-সময় উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা গুলি বিনিময় হয়। কিন্তু পাকসেনারা সংখ্যায় বেশি থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ তুলে নিলে হানাদার বাহিনী উত্তর বেতডোবা গ্রামের চারজনসহ পার্শ্ববর্তী চামুরিয়া- ভদ্রবাড়ি গ্রামের আটজন নারী-পুরুষকে হত্যা করে। এ গণহত্যার শিকার হন উত্তর বেতডোবা গ্রামের জাফর আলী শেখ, এছাহাক আলী মণ্ডল, কোরবান আলী ও তালেব আলী এবং চামুরিয়া-ভদ্রবাড়ি গ্রামের ছমির উদ্দিন, বুজরক আলী, আনছের আলী, আনতাজ আলী, নান্নু খান, আঞ্জুমান আরা, আঁখি খাতুন ও রোকেয়া খাতুন। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড