বেরুবাড়ি গণহত্যা (নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম)
বেরুবাড়ি গণহত্যা (নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম) সংঘটিত হয় ১৯শে নভেম্বর। এতে ২০-২৫ জন নিরীহ গ্রামবাসী নির্মম হত্যার শিকার হন।
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার পূর্বদিকে বেরুবাড়ি গ্রাম। এ এলাকাটিতে রাজাকারদের বেশ আধিপত্য ছিল। তাদের আধিপত্য খর্ব করার জন্য ৬নং সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন নওয়াজিস উদ্দিন কোম্পানি কমান্ডার শামসুল হককে বেরুবাড়িতে অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশে শামসুল হক ৩ প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধার একটি গ্রুপ নিয়ে ১৮ই নভেম্বর রাতে নৌকাযোগে দুধকুমার নদীপথে বেরুবাড়িতে এসে অবস্থান নেন। স্থানীয় রাজাকারদের মাধ্যমে বেরুবাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের কথা জানতে পেরে ১৯শে নভেম্বর ভোরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর একটি গ্রুপ বেরুবাড়িতে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান লক্ষ করে গুলিবর্ষণ শুরু করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি চালান। কিন্তু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ভারী অস্ত্রের সামনে টিকতে না পেরে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেন। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটলে পাকবাহিনী বেরুবাড়ি গ্রামের ২০-২৫ জন সাধারণ মানুষকে আটক করে চরবেরুবাড়ি স্কুল মাঠে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ গণহত্যায় শহীদদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন- নিশান মণ্ডল (পিতা আবদুস ছাত্তার মণ্ডল), এলাহী মণ্ডল (পিতা আবদুল করিম মণ্ডল ওরফে গুইট্যা মণ্ডল), পলান শেখ (পিতা জয়েন শেখ), সাহাবুদ্দিন (পিতা মোসলেম শিকদার), অফেজ উদ্দিন (পিতা মোসলেম শিকদার), আইন উদ্দিন শেখ (পিতা আবদুল শেখ), সাহাবুদ্দিন শেখ (পিতা আইন উদ্দিন শেখ), ইউসুফ শেখ (পিতা আইন উদ্দিন শেখ), ইসমাইল হোসেন (পিতা তোমেজ আলী শিকদার), বকিয়ত উল্যা (পিতা ফজর আলী), আবদুস সোবহান (পিতা কালাম শেখ), হায়দার আলী (পিতা মহর আলী), আবদুর রহমান (পিতা শুকুর আলী) ও বাজিত উল্যা (পিতা পেরপেরু শেখ)। [শফিউদ্দিন তালুকদার]
সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড