You dont have javascript enabled! Please enable it!

বেরুয়ান যুদ্ধ (আটঘরিয়া, পাবনা)

বেরুয়ান যুদ্ধ (আটঘরিয়া, পাবনা) সংঘটিত হয় ২২শে অক্টোবর। এতে ৯ জন রাজাকার নিহত হয়। অপরপক্ষে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
ঘটনার দিন আটঘরিয়া থানার রাজাকার কমান্ডার আব্দুল মমিনের নেতৃত্বে একদল রাজাকার থানা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে মাজপাড়া ইউনিয়নের খিদিরপুর আদিবাসী পল্লিতে হানা দেয়। সেখানে তারা লুটপাট, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং নিরীহ গ্রামবাসীদের বেদম মারপিট করে। নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়। কয়েক ঘণ্টা ধরে তাদের এই তাণ্ডব চলাকালে চারদিকে সে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলের কাছেই মাজপাড়া গ্রামে মুজিব বাহিনী (বিএলএফ) প্রধান আনোয়ার হোসেন রেনুর নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করছিল। আর কাছাকাছি ছিল পাবনার নয়নামতির শাহজাহান কমান্ডারের একটি দল। তাঁরা মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেন যে, রাজাকার বাহিনীকে তাঁরা আক্রমণ করবেন।
আনোয়ার হোসেন রেনু এবং কমান্ডার শাহজাহানের নেতৃত্বাধীন এফএফ বাহিনী একত্রে মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন, জনবসতি এলাকায় আক্রমণ না করে নির্জন স্থানে শত্রুদের ওপর আক্রমণ করা হবে। সেই মোতাবেক ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে বেরুয়ান গ্রামের উত্তর প্রান্তে হাড়লপাড়া ও বেরুয়ান মৌজার ভেতর রাস্তার দুই ধারে মুক্তিযোদ্ধারা এম্বুশ করেন। তখন ছিল রমযান মাস। ইফতারের কিছু সময় পর রাজাকার বাহিনী ফিরে আসার পথে এম্বুশের মাঝে এসে পড়লে গুলাগুলি শুরু হয়। প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলা সেই যুদ্ধে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার আব্দুল মমিনসহ ৯ জন রাজাকার নিহত হয়। অপরদিকে আনোয়ার হোসেন রেনুর গ্রুপের ২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাঁরা হলেন- আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের ত্রিমোহন গ্রামের তোয়াজ উদ্দিন মাস্টার এবং দেবোত্তর ইউনিয়নের পাটেশ্বর গ্রামের হায়দার আলী। পরে এই দুই শহীদের মরদেহ মাজপাড়া গ্রামের ডা. নওশের আলীর বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে সমাহিত করা হয়। উল্লেখ্য, শহীদ তোয়াজ উদ্দিন মাস্টার এবং শহীদ হায়দার আলী এই যুদ্ধের কয়েকদিন পূর্বে আনোয়ার হোসেন রেনুর নেতৃত্বে ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আটঘরিয়া এলাকায় আসেন। [আমিরুল ইসলাম রাঙা]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!