You dont have javascript enabled! Please enable it!

বুড়িদলা বিলপাড় গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর)

বুড়িদলা বিলপাড় গণহত্যা (পার্বতীপুর, দিনাজপুর) সংঘটিত হয় এপ্রিল মাসে। এতে ২৭ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়।
বুড়িদলা একটি পুকুরের নাম। এ পুকুরের চারদিকে আছে দলা এলাকা, সাধারণভাবে যা বুড়িদলা বিলপাড় নামে পরিচিত। এর অবস্থান পার্বতীপুর উপজেলার চশ্চীপুর ইউনিয়নের সালন্দর গ্রামে। পাকিস্তানি বাহিনী এপ্রিল মাসে এ বুড়িদলা বিলপাড়ে গণহত্যা চালায়।
প্রায় তিন এশর জায়গা জুড়ে বুড়িদলা বিলপাড়ে তখন পাটক্ষেত ছিল। এছাড়া বিলপাড়ের কিছু অংশে ছিল বিষকাটালি গাছ। পাকিস্তানি বাহিনী বাজারপাড়া এবং চশ্চীপুর চৈাপাড়ায় হামলা ও হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করলে চৈাপাড়ার ভীত-সন্ত্রস্ত লোকজন দেড় কিলোমিটার দূরের বুড়িদলা বিলপাড়ের পাটক্ষেতের ভেতর ও বিষকাটালি গাছের আড়ালে লুকিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করে। রাজাকার ও বিহারিদের দেখানো পথে হানাদার বাহিনী পাটক্ষেতের ভেতরে গিয়ে নারী, শিশু, পুরুষ সকলকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যা করে। অপরদিকে বিষকাটালি গাছের আড়ালে যারা লুকিয়ে ছিল, তাদের দূর থেকে গুলি করে হত্যা করে। এদিন ২৭ জন মানুষ হত্যার শিকার হন, যাদের বেশিরভাগ ছিলেন বড়চণ্ডীপুর চৈাপাড়ার অধিবাসী। নিহতরা হলেন— আছিরন বুড়ি, গুলাই বিবি (স্বামী মো. আতাউল্লাহ), কাছিমুল্লাহ (পিতা চয়নউল্লাহ্), কাছিমুল্লাহ্ তিন বছর বয়সী শিশু কন্যা ও ছেলে কানজারু, অছিউদ্দিন বুড়া (৮০), আব্দুস সামাদ (৬০) (পিতা অছিউদ্দিন), রফিউদ্দিনের স্ত্রী (বড় বুড়ি নামে পরিচিত), রাবেয়া খাতুন (৪০) (স্বামী মো. ফারাজউদ্দিন), হামিদা বেগম (৭৫) (স্বামী মহরউদ্দিন), মো. হাসানউদ্দিন (৬৫) (পিতা মো. নেজমউদ্দিন) প্রমুখ। এছাড়া পার্বতীপুর দক্ষিণপাড়ার মোবারক হোসেনের পিতা ও মাতা, পার্বতীপুরের জনৈক খোকনের পিতা ও মাতাসহ আরো অনেকেই বুড়িদলা বিলপাড়ে গণহত্যার শিকার হন। গণহত্যায় নিহতদের এলাকার লোকজন সেখানেই সমাহিত করে। কিন্তু গণহত্যার স্থান সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ এ পর্যন্ত নেয়া হয়নি। [আজহারুল আজাদ জুয়েল]

সূত্র: বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ ৭ম খণ্ড

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!